Logo

মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ নৌপথ এখন মৃত্যু ফাঁদ

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ১০:৫৭
8Shares
মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ নৌপথ এখন মৃত্যু ফাঁদ
ছবি: সংগৃহীত

মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ নৌপথ যেনো একটি মৃত্যু ফাঁদ। স্বল্প দূরত্বের নৌপথটি মুন্সীগঞ্জ বাসীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও দীর্ঘ ৫০ বছরেও কোনরকম উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।

বিজ্ঞাপন

মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ নৌপথ যেনো একটি মৃত্যু ফাঁদ। স্বল্প দূরত্বের নৌপথটি মুন্সীগঞ্জ বাসীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও দীর্ঘ ৫০ বছরেও কোনরকম উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। দীর্ঘ দিন ধরে পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ লঞ্চ দিয়েই চলছে যাত্রী পারাপার। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বেরেই মানুষের চলছে সলিলসমাধি অসংখ্য । এমন ভয়েই দিন দিন যাত্রীরা এই নৌরুট ত্যাগ করছেন।

ব্যবসা-বাণিজ্য ও চাকরির সুবাদে মুন্সীগঞ্জ শহর থেকে প্রতিদিন অন্তত ২০ হাজারের ও বেশি মানুষ ঢাকায় যাতায়াত করেন।এই অঞ্চলের মানুষ সড়ক পথে যানজট এড়াতে লঞ্চে নারায়ণগঞ্জ হয়ে ঢাকায় যেতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন । তবে জোড়াতালি দেওয়া লক্কর-ঝক্কর মার্কা মান্ধাতার আমলের কয়েকটি লঞ্চ বর্তমানে চলাচল করে মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ রুটে। ঝুঁকিপূর্ণ এই লঞ্চগুলো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন হাজার-হাজার যাত্রী মুন্সীগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জ যাতায়াত করছেন। কিন্তু স্বল্প দূরত্বের গুরুত্বপূর্ণ এই নৌপথে যাত্রী সেবার মান উন্নয়নে দীর্ঘ দিনেও উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

নিয়মিত লঞ্চযাত্রী মলিনা সাহা অপু জানান, একসময় এই নৌরুটটি নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জ হয়ে কাঠপট্টি ঘাট যেত। সেখান থেকে আব্দুল্লাপুর ঘাট ও বেতকা ঘাট হয়ে তালতলা ঘাট পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। কিন্তু বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ-মুন্সীগঞ্জ নৌরুটটি বন্ধের পথে। এই নৌরুটের লঞ্চ চলাচলের সময় ঠিক নেই। বৃদ্ধি করা হয়েছে ভাড়া। তার উপরে সিমেন্ট ফ্যাক্টরির ক্লিংকারের ধোঁয়া ও এলোপাতাড়ি জাহাজ নোঙ্গর করে রাখা হয়। তাই অনেক যাত্রীই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন এই পথ থেকে।

বিজ্ঞাপন

এই নৌপথে ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল কার্গোর ধাক্কায় সাবিত আল হাসান নামের একটি লঞ্চডুবে সলিলসমাধি হয় ৩৬ জনের। বছর না ঘুরতেই ২০২২ সালের ২০ মার্চ আরেকটি লঞ্চ ডুবে ১০ জনের মৃত্যু হয়। এরপর দুর্ঘটনা এড়াতে অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয় অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, নিরাপদ নৌযান সংযুক্ত করে নৌপথটি সচল করা হবে। কিন্তু কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর পুরনো লঞ্চগুলোকেই চলাচলের জন্য পুনরায় অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে ঝুঁকিপূর্ণ নৌপথটি মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ ঘাটের ইজারাদার দীল মোহাম্মদ কোম্পানী  জানান, এই নৌরুটে ২০/২৫টি লঞ্চ চলত। তবে বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ নৌরুটে ৮ লঞ্চ চলাচল করছে। বড় লঞ্চগুলোর মধ্যে খাঁজা, বিপ্লবসহ আরও বেশ কয়েকটি লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এর অন্যতম কারণ সিমেন্ট কোম্পানির জাহাজ নোঙ্গর করায় নৌরুট সংকুচিত হয়ে গেছে। যার ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গেছে। এছাড়া গত কয়েক বছরে বিভিন্ন জাহাজ ও লাইটার ভেসেলের সংঘর্ষে লঞ্চ ডুবিতে অনেক মানুষ মারা গেছে। বর্তমানে জাহাজগুলো এলোমেলো নোঙ্গরের কারণে রাত্রীতে লঞ্চে ছিনতাই ডাকাতি মতো ভয়ঙ্কর ঘটনারও ঘটছেু হরহামেশা। এমন পরিস্থিতিতে এই পথটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়াতে নিয়মিত চলাচল করা যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে অনেকাংশেই।

বিজ্ঞাপন

অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার নারায়ণগঞ্জ জোনের সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল জানান, নতুন লঞ্চ নামানোর আর্থিক সক্ষমতা তাদের নেই। তাই যাত্রীদের কথা চিন্তা করেই আগের লঞ্চ গুলো চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ’র মুন্সীগঞ্জ নদী বন্দরের ইন্সপেক্টর (নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক) রাজিব চন্দ্র রায় জনবাণীকে জানান, দুর্ঘটনার পর নৌপথ সচল রাখার জন্য পুরনো ১১ লঞ্চকে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে যাত্রী কম থাকায় ৯ টি লঞ্চ চলাচল করছে।

যাত্রী কমে যাওয়া, লঞ্চ দুর্ঘটনা ও ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সিমেন্টের জাহাজগুলো এখন এলোমেলো রাখে না। নদীতে নৌপুলিশ প্রতিনিয়ত টহল দিচ্ছে, তাই এখন আর ছিনতাই হচ্ছে না। তবে যাত্রী কমে যাওয়ার বিষয়ে তিনি তেমন কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে ২০২৩ সালের পরে আর এই লঞ্চগুলো চলাচল করতে দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

আরএক্স/

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD