Logo

সরাইলে চেত্রা নদীর ওপর ৭০০ ফুট বাঁশের সাঁকো: স্থায়ী সেতু’র আশায় লাখো মানুষ

profile picture
জনবাণী ডেস্ক
৫ মার্চ, ২০২৫, ২৪:৪২
63Shares
সরাইলে চেত্রা নদীর ওপর ৭০০ ফুট বাঁশের সাঁকো: স্থায়ী সেতু’র আশায় লাখো মানুষ
ছবি: সংগৃহীত

চেত্রা নদী’র ওপর স্থায়ী সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তিতে ১৫ টি গ্রামের লাখো মানুষ।

বিজ্ঞাপন

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া চেত্রা নদী’র ওপর স্থায়ী সেতু নির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তিতে ১৫ টি গ্রামের লাখো মানুষ। যার ফলে এখানকার মানুষদের নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা ৭০০ ফুট বাঁশের সাঁকো। 

বিজ্ঞাপন

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সরাইল উপজেলার অরুয়াইল-পাকশিমুল এ দু’টি ইউনিয়ন ছাড়াও কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও বাজিতপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষ এ সাঁকো ব্যবহার করে থাকে। বর্ষা মৌসুমে নৌকা এবং শুষ্ক মৌসুমে পায়ে হেটে যাতায়াত করেন তারা। 

বিজ্ঞাপন

চেত্রা নদীর এই সেতুটির অভাবে চিকিৎসা, শিক্ষা’সহ নানা ধরণের সুবিধাবঞ্চিত স্থানীয়রা। বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে নানা দূর্ঘটনা। 

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে রানীদিয়া গ্রামের রহমত আলী ও মজর মিয়া প্রায় দুই লাখ টাকা ব্যয়ে প্রথমে উপজেলার অরুয়াইল বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া চেত্রা নদীতে বিশাল এই সাঁকোটি নির্মাণ করেছিলেন। এরপর থেকে প্রতি বছর নভেম্বর মাসে প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা খরচ করে এই সাঁকোটি পুননির্মাণ করা হয়। শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৭ মাস লোকজন এই সাঁকো দিয়ে পারাপার হয়। জুনের মাঝামাঝি বর্ষায় পানি এলে সাঁকোটি আবার ভেঙে ফেলা হয়।

এ বিষয়ে রাণীদিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ইসলাম বলেন, নদীর দক্ষিণপাড়ের গ্রামগুলোতে প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ নদীর উত্তরপাড়ের অরুয়াইলে গড়ে ওঠায় সেখানে যাতায়াত করতে সাঁকো পারি দিতে হচ্ছে। 

বিজ্ঞাপন

দীর্ঘ এই সাঁকো দেখে দূর-দূরান্তের লোকজন প্রথম দর্শনে আশ্চর্য্য ও অভিভূত হয়ে পড়েন। বছরের কার্তিক মাসে সাঁকোটি বসানো হয়। আর জ্যৈষ্ঠ মাসে উঠিয়ে ফেলা হয়। বছরের সাত মাস ১৫ গ্রামের লোকজন ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সাঁকো পারি দিয়ে যাতায়াত করেন।

বিজ্ঞাপন

সাঁকো পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রাণীদিয়া গ্রামের নূর ইসলাম বলেন, প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার লোক যাতায়াত করেন। পণ্য সামগ্রী ও শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি থাকলেও অন্যদের কাছ থেকে পারাপারের ক্ষেত্রে পাঁচ টাকা আদায় করা হয়। ভুক্তভোগী গ্রামের লোকজন এখানে স্থায়ী একটি সেতু নির্মাণের দাবি করে এলেও আজ অবধি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

স্থানীয় লোকজন জানান, স্বাধীনতার পর প্রতিবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা এই নদীর উপর সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেতু নির্মাণ হয়ে ওঠেনি।

বিজ্ঞাপন

রাণীদিয়া গ্রামের শিক্ষক আবুল বাশার বলেন, ছেত্রা নদীর ওপর পাকা সেতু খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ। ইতোমধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময়ে পানির পরিমাপ, বাস্তবায়নযোগ্যতা যাচাই করে গেছেন। আমরা আশাবাদী আগামী প্রাক-একনেকে এখানে পাকা সেতু অনুমোদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, এলাকার কৃতিসন্তানরা এই বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। 

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, এই বাঁশের সাঁকোটি দিয়ে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে থাকে। আমি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় থেকে দুই বার প্রকল্পের (পিডি) মহোদয়কে এনে সরজমিনে তদন্ত করিয়েছি এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে আমি এখনও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখছি, বাঁশের সাঁকোর স্থলে এখানে পাকা সেতু নির্মাণ করানোর জন্য। 

বিজ্ঞাপন

ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ছেত্রা নদীর ওপর একটি পাকা সেতু হলে ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াত সুবিধা উন্নয়নের পাশাপাশি কৃষি পণ্য পারাপারে সুবিধা হবে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে। তাই জরুরি ভিত্তিতে এখানে পাকা সেতু নির্মাণের দাবি  জানাচ্ছি।

বিজ্ঞাপন

এসডি/

Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD