Logo

আ.লীগ নেতার হিমাগারে শিক্ষার্থীকে ‘হাতুড়িপেটা’ ও দুই বোনকে নির্যাতন

profile picture
জেলা প্রতিনিধি
রাজশাহী
৮ অক্টোবর, ২০২৫, ২৪:৫৭
28Shares
আ.লীগ নেতার হিমাগারে শিক্ষার্থীকে ‘হাতুড়িপেটা’ ও দুই বোনকে নির্যাতন
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ আলী সরকারের হিমাগারে মেডিকেল শিক্ষার্থী ও তার দুই খালাতো বোনকে আটকে রেখে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর) সকালে জেলার পবা উপজেলার বায়া এলাকায় সরকার কোল্ড স্টোরেজের অফিস কক্ষে তাদের উপর নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন অফিস কক্ষটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালান।

এলাকার মোহাম্মদ আলী সরকারের ছেলে আহসান উদ্দিন সরকার জিকো (৪৫), মেয়ে আঁখি (৩৫) ও হাবিবাকে (৪০) অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় রাজশাহী এয়ারপোর্ট থানা-পুলিশ তাদের আটক করে নিয়ে যায়। এর আগে পুলিশ আহত তিনজনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠায়।

নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের বাড়ি পবা উপজেলায়। আহত যুবক রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার সঙ্গে খালাতো দুই বোন ছিলেন। এ ঘটনায় যুবকের ভাই বাদী হয়ে পবা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

বিজ্ঞাপন

এজাহারে বলা হয়েছে, অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে তিনজনকে লাঠি, বাঁশ ও হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। একপর্যায়ে শরীরে সেফটি পিন ফুটিয়ে নির্যাতন করা হয়।

দুপুরে হিমাগারে বসে থাকার সময় নির্যাতনের শিকার ওই নারীর কোলে শিশুসন্তান ছিল। তিনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। তার কান দিয়ে রক্ত ঝরছিল। আহত মেডিকেল শিক্ষার্থীর দুই হাতে জখম ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ওই কিশোরীকেও আঘাত করা হয়।

বিজ্ঞাপন

আহত নারী জানান, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকারের সঙ্গে তাদের পরিবারের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি তার ছেলেমেয়েরা ভালোভাবে নিতেন না। তাদের সন্দেহ, মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে তার অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। আজ সকালে ওই নারীকে ফোনকল করে তার হিমাগারে ডাকা হয়। তখন তিনি তার খালাতো ভাই ও ছোট বোনকে নিয়ে আসেন। এখানে আসার পর মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও মেয়েরা তাদের ধাক্কা দিতে দিতে অফিস কক্ষের ভেতরে নিয়ে যান। 

এরপর কর্মচারীদের সহায়তায় তাদের উপর নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের সময় দরজা বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

পরে স্থানীয় লোকজন চিৎকার শুনতে পেয়ে এগিয়ে যান। তারা অফিসের দরজা খুলতে বললেও খোলা হচ্ছিল না। একপর্যায়ে দরজা খোলা হয়। পরে পুলিশ এলে তাদের মোবাইল ফোন ফেরত দেওয়া হয়।

নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীর অভিযোগ, মোহাম্মদ আলী সরকারের দুই মেয়ে তাদের দুই বোনের সারা শরীরে সেফটি পিন ফুটিয়ে নির্যাতন করেছেন।

এদিকে বেলা ১১টা থেকে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা হিমাগারের ভেতর মোহাম্মদ আলী সরকারের ছেলেমেয়েদের অবরুদ্ধ করে রাখে। তারা তাদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার দাবি জানাতে থাকে। তবে বের করলেই হামলার শঙ্কায় পুলিশ তাদের নিয়ে যাচ্ছিল না। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বেলা ২টার দিকে স্থানীয় লোকজন অফিস কক্ষের সিসি ক্যামেরা ও কাঁচের জানালাগুলো ভেঙে ফেলেন। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হয়। তারা আসার পর তিনজনকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন জানান, তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তিনজনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।

জেবি/এমএল
Logo

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ

মোঃ শফিকুল ইসলাম ( শফিক )

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ৫৭, ময়মনসিংহ লেন, ২০ লিংক রোড, বাংলামটর, ঢাকা-১০০০।

ফোনঃ 02-44615293

ই-মেইলঃ dailyjanobaninews@gmail.com; dailyjanobaniad@gmail.com

জনবাণী এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। কপিরাইট © ২০২৫

Developed by: AB Infotech LTD