সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন নুর
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:০৫ অপরাহ্ন, ৬ই জুলাই ২০২৩

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর ইসরাইলের নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান।
তিনি জানান, গণমাধ্যমে স্বীকার না করলেও গণঅধিকার পরিষদের একাধিক বৈঠকে সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন নুর। তবে কী বিষয়ে ইসরায়েলি ওই নাগরিকের সঙ্গে নুর বৈঠক করেছেন তা দলকে জানাননি।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ফারুক হাসান।
ইসরায়েলি নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির নাম বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আলোচনায় আসে ২০১৬ সালের মে মাসে। গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাতে ইসরায়েলিদের সঙ্গে আঁতাত করেছেন। শিপন কুমার বসু নামে এক ব্যক্তির মধ্যস্থতায় মেন্দির সঙ্গে আসলামের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সংবাদ সম্মেলনেও সাফাদির সঙ্গে নুরের বৈঠক হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
আরও পড়ুন: কফি শপে মেন্দি ও নুরের বৈঠক হয়েছে: রেজা কিবরিয়া
লিখিত বক্তব্যে গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানান, দলের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৮ জুন রেজা কিবরিয়ার বাসার ছাদে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির একটি জরুরি সভা হয়। সেখানে নুর দলের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করে রেজা কিবরিয়ার ইনসাফ কায়েম কমিটির একটি সভায় অংশ নেওয়া ও তাদের কাছ থেকে অর্থগ্রহণের অভিযোগ তোলেন। তখন ড. রেজা কিবরিয়া ইনসাফ বাস্তবায়ন কমিটির সভায় যাওয়ার ব্যাখ্যা দেন। তবে, আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন এবং প্রমাণ থাকলে তা হাজির করতে বলেন।
ফারুক জানান, একই সময়ে রেজা কিবরিয়া নুরের বিরুদ্ধে কয়েকটি সুস্পষ্ট অভিযোগ আনেন। যার মধ্যে ইসরায়েলি নাগরিক ও কথিত মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে আলোচিত বৈঠকের সত্যতা সংক্রান্ত কিছু তথ্য, আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে দলীয় তহবিল গ্রহণ, হিসাব না দেওয়া এবং শিপন বসুসহ বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সন্দেহভাজন লোকদের সঙ্গে গোপন বৈঠকের অভিযোগ তোলেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে নুর কাতারে ইসরায়েলি নাগরিক মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে কোনো রকম আর্থিক সুবিধা গ্রহণের বিষয়ে অস্বীকার করেন। তখন নুর সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও সেই বৈঠকের আলোচ্যসূচি কী ছিল, তা তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
ফারুক হাসান আরও বলেন, ওই রাতেই দলের আহ্বায়ক একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, তিনি জরুরি প্রয়োজনে দেশের বাইরে যাচ্ছেন এবং তিনি দেশে ফিরে পুনরায় সভা ডেকে এ বিষয়ে সমাধান করবেন। কিন্তু ১৯ জুন নুর দফতর সমন্বয়কের মাধ্যমে নোটিশ দিয়ে আরেকটি সভা ডাকেন, যা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বৈধ নয়।
তিনি আরও বলেন, তখন অনেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সময় নিয়ে, ধীরে-সুস্থে অগ্রসর হওয়ার পরামর্শ দেন। যেহেতু আহ্বায়ক কয়েকদিনের জন্য বিদেশে আছেন, তার অবর্তমানে দলের ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক চলতি দয়িত্ব পালন করে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পারেন বলে মত দেন। কিন্তু সভা শেষে দফতর সমন্বয়কের স্বাক্ষরে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, 'রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে সরিয়ে রাশেদ খানকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক' করার কথা। এমন বিজ্ঞপ্তি সুস্পষ্টভাবে বৈঠকের সিদ্ধান্ত প্রতারণামূলকভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি।
জেবি/ আরএইচ/