আওয়ামী লীগ নির্বাচনে বিদেশি তৎপরতাকে সমস্যা মনে করছে না
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০:৪৩ পূর্বাহ্ন, ৪ঠা ডিসেম্বর ২০২৩

আওয়ামী লীগ ও সরকার ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিদেশি তৎপরতাকে সমস্যা মনে করছে না । বিদেশিদের পক্ষ থেকে যেসব বিষয় তুলে ধরা হচ্ছে ক্ষমতাসীন সরকারও জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সেসব বিষয়ে সচেষ্ট রয়েছে বলে জানিয়েছেন আ. লীগ নেতারা।
আওয়ামী লীগ ও সরকারের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, বিদেশিদের বক্তব্য হলো অবাধ, সুষ্ঠু, নিরক্ষেপ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। ক্ষমতাসীন আ.লীগ সরকারও সেই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরক্ষেপ নির্বাচনের ব্যাপারে ইতোমধ্যেই দেশের মানুষের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সে অনুযায়ী সরকার ইতিমধ্য সব পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কাজ করে যাচ্ছে। এর পরও বিদেশিদের তৎপরতা অব্যাহত থাকলে সরকারের কিছু করার নেই-এমন অবস্থানই সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের।
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে অনেক আগে থেকেই আন্দোলন করে আসছে ওই দলগুলো।
এখন নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের সমমনারা ধারাবাহিক অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে আসছে। তবে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে আগে থেকেই দৃঢ় অবস্থানে আওয়ামী লীগ ও সেই অবস্থানেই এগিয়ে যাচ্ছে দলটি।
এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে। এই নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার কথাও ওই দেশগুলো থেকে বলা হচ্ছে। তবে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গত শনিবার (২ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফেসবুক পেজে এক বার্তায় জানায়, আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনের বিপরীতে মোট ২ হাজার ৭১১টি মনোনয়নপত্র পেয়েছে নির্বাচন কমিশন। ৪৪ টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি রাজনৈতিক দলের মোট ১৯৬৪ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। অনেক আগ্রহ ও উৎসাহ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে প্রার্থীদের অংশগ্রহণ এখন পর্যন্ত অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন প্রক্রিয়ার একটি বৈশিষ্ট্য, যা নির্বাচন কমিশন এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এছাড়াও প্রায় ৩৩ জন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও নেতাসহ মোট ৭৪৭ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এটি আসন্ন নির্বাচনের অংশগ্রহণমূলক প্রকৃতিও তুলে ধরে।
এদিকে আওয়ামী লীগ ও সরকারের ওই সূত্রগুলো আরও জানায়, নির্বাচন নিয়ে কিছু দেশ বিভিন্নভাবে তৎপর হয়ে সরকারের ওপর চাপ তৈরির চেষ্টা করছে। এর জন্য বিএনপিকেই দায়ী করছে আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতিনির্ধারকরা। তাদের অভিযোগ, কয়েকটি দেশ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের ওপর যে চাপ তৈরি করার চেষ্টা করছে ও তৎপরতা চালানো হচ্ছে বিএনপিই ওই সব দেশকে প্রভাবিত করেছে। তবে বিদেশিদের এই তৎপরতা ও চাপকে সমস্যা মনে করছে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আসলে বিএনপি বিদেশিদের আমন্ত্রণ করে ডেকে এনে নির্বাচন নিয়ে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে। বিদেশিরা তৎপরতা চালাক কিন্তু এতে আমরা কোনো সমস্যা মনে করছি না। শেখ হাসিনা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে পারেন এটা দেখিয়ে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু যদি কোনো রাষ্ট্র কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পর্ককে রাষ্ট্রের চেয়ে বড় মনে করে তাহলে সেটার কিছু করার নেই। বিদেশিদের এ সব তৎপরতায় কোনো সমস্যা আছে বলে মনে করি না। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সব আইন মেনে চলে, জাতিসংঘসহ সব সংস্থার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করে থাকে। কারো সঙ্গে সম্পর্কের কোনো চির ধরার সুযোগ নেই।
জেবি/এজে
বিজ্ঞাপন
পাঠকপ্রিয়
আরও পড়ুন

তারেক রহমানকে চীন সফরে আমন্ত্রণ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির

শহীদদের দলীয়করণ করলে তাদের অবমূল্যায়ন করা হবে: ডা. জাহিদ হোসেন

খেলাধুলা ও ক্রীড়াঙ্গন রাজনীতি মুক্ত থাকা উচিত : মির্জা ফখরুল

তারেক রহমানের দেশে ফেরার নেপথ্যে নিরাপত্তা ও নির্বাচন
