ডিপিএইচই'র আলোচিত ঘটনার তদন্তে মন্ত্রণালয়ের চিঠি, অধিদপ্তরে ফিরেছে স্বস্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:০১ অপরাহ্ন, ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৪

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. সরোয়ার হোসেনের বিদায়ী অনুষ্ঠান পণ্ড করতে গেলো ৬ এপ্রিল জামালপুর জেলার নির্বিহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে অডিটেরিয়ামে টেবিল-চেয়ার ভাংচুর করে সাবেক প্রধান প্রকৌশলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে হলরুমের গেটে তালাবদ্ধ করে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিলো। পরিস্থিতি চরম উত্তেজনায় পৌঁছালে অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণকে পুলিশের সহযোগিতায় অনুষ্ঠান কোন মতে শেষ করা হয়।
এদিকে ৬ এপ্রিল সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে অনুষ্ঠান পণ্ড হওয়ার তদন্ত চেয়ে মন্ত্রণালয়ের পাঠানো চিঠিতে অধিদপ্তরে ফিরে এসেছে স্বস্তি। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ সরকারের দলের নেতা পরিচয় দেয়া এ সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় ছিলো সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারীরা। তাদের দাবী দীর্ঘদিনের শৃঙ্খল ভেঙে তারা আজ মুক্ত হতে পেরেছে। তদন্ত সঠিক হবে এটাই চাওয়া ডিপিএইচই'র সকলের।
আরও পড়ুন: পদত্যাগ করলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম
২৮ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগের পানি সরবরাহ-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. মিজানুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে চাঞ্চল্যকর ঘটনার তদন্ত চাওয়া হয়েছে। ঘটনাটি সে সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়ে বেশ আলোচনায় আসে। উক্ত ঘটনার অভিযোগসমূহ তদন্তে স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব মো. তমিজুল ইসলাম খানকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয় এবং বর্ণিত কর্মকর্তাকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রতিবেন দাখিল করতে বলা হয় চিঠিতে।
এছাড়া উক্ত ঘটনায় প্রকল্প পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম মিয়া, সিসিটি মো. মোফাজ্জল হোসেন, হেড অ্যাসিসটেন্ট ইকরামুল হক ও অফিস সহকারী মো. খোরশেদ আলমসহ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের তদন্তের আওতায় আনতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: নতুন নিয়োগ পাওয়া ৮ ডিসির নিয়োগ বাতিল
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দলের পরিচয়ে নজরুল, সুলতান, মোফাজ্জল, ইকরাম সিন্ডিকেট বাহিনী অধিদপ্তরে প্রভাব খাটিয়ে কর্মকর্তাদের কোণঠাসা করে রেখে তাদের দাবী আদায়ে সোচ্চার ছিলো। এই সিন্ডিকেটের দাপটে কর্মকর্তা কর্মচারীদের আতংক নিয়ে অফিস করারও অভিযোগ রয়েছে। প্রধান প্রকৌশলীদের বিদায়ের দিন ঘনিয়ে এলে মোফাজ্জল-ইকরাম সিন্ডিকেট তাদের দাবী আদায়ে প্রধান প্রকৌশলীদের চাপ দিতেন, তারা রাজি না হলে তাদের লাঞ্চিত করতেন এবং বঙ্গবন্ধুর নামে স্লোগান দিয়ে ভয় ভীতি দেখিয়ে তাদের চাপে মুখে বাধ্য করতেন। নিয়োগ ও বদলী বাণিজ্যের মূল হোতা নামে পরিচিত সিসিটি মোফাজ্জল ও ইকরাম সিন্ডেকেট। ২০২২ সালে সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমানের বিদায় বেলায়ও এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন আওয়ামী লীগ সংগঠনের পরিচয় দেওয়া এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এই বাহিনী কিছুদিন চুপ থাকলেও এখন আবার সোচ্চার হয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য তৈরিতে নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে অধিদপ্তরের পরিবেশ নষ্টে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠারও অভিযোগ রয়েছে।
জেবি/এসবি