বাংলাদেশে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস নিয়ে ভয়াবহ বার্তা উঠে এল গবেষণায়
জনবাণী ডেস্ক
প্রকাশ: ০১:৪১ অপরাহ্ন, ১২ই এপ্রিল ২০২৫

বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রেক্ষাপটে চলতি শতকের শেষ নাগাদ বাংলাদেশে ভয়াবহ ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন এমআইটির বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় বলা হয়েছে, বর্তমানে যে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসকে শতবর্ষে একবারে ঘটে, তা আগামী দিনে প্রতি দশ বছরে, এমনকি আরও ঘন ঘন ঘটতে পারে বলে আশংঙ্খা করা হচ্ছে।
গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ‘ওয়ান আর্থ’ জার্নালে। এতে বলা হয়েছে, যদি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বর্তমান হারে চলতে থাকে, তবে ১০০ বছর পরপর দেখা দেওয়া ভয়াবহ ঝড়-জলোচ্ছ্বাসগুলো বাংলাদেশে প্রতি দশ বছরেই ঘটবে। এ ছাড়া প্রতি দশকেই যেসব বড় ধরনের ঝড়ের দেখা মেলে, কয়েক বছর পরপর তা আরও ঘন ঘন আসবে।
বাংলাদেশ একটি নিম্নভূমি অধ্যুষিত দেশ। দেশটিতে ১৭ কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ বসবাস করে। দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমখি হয়। অতীতে এখানেই বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ কিছু বন্যা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: চারুকলায় আগুনে পুড়ে গেল ‘ফ্যাসিস্টের মুখাকৃতি’
গবেষকরা আরও আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে ঘূর্ণিঝড়ের সময়কাল মৌসুমী বর্ষার সঙ্গে মিশে যেতে পারে— যা আগে কখনো দেখা যায়নি। ফলে দীর্ঘমেয়াদি অতিবৃষ্টির সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বাড়বে।
গবেষণার সহ-লেখক এমআইটির আর্থ, অ্যাটমোসফিয়ারিক অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সেস বিভাগের প্রধান গবেষক সাই রাভেলা বলেন, ‘বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় খুবই সক্রিয়। তবে তাদের প্রস্তুতি বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতিকে ভিত্তি করেই গড়ে ওঠে। আমরা যা দেখছি, তা হলো— এই ধরনের বিধ্বংসী জলোচ্ছ্বাসের পুনরাবৃত্তি এখন প্রায় দশগুণ বেশি। এটি উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই।’
গবেষকরা বাংলাদেশের উপকূলে হাজার হাজার সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের সিমুলেশন চালিয়েছেন। সেখানে দেখা গেছে যদি উষ্ণতা বাড়তে থাকে, তবে ৩ মিটার উচ্চতার মতো ভয়াবহ ঝড়-জলোচ্ছ্বাস প্রতি ১০ বছরেই ঘটতে পারে।
আরও পড়ুন: ‘মার্চ ফর গাজা’য় অংশ নিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনতার ঢল
তারা জানান, ঝড়ের সময় যদি বর্ষাকাল শুরু হয়ে যায়, তবে মাটি ভেজা ও নরম থাকে এবং ঘূর্ণিঝড় সেই পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে। এই ধরনের বিপর্যয় কেবল জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই ঘটবে।
রাভেলা বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা। তবে বিশ্বজুড়ে একই গল্প— কোথাও গরমের চাপ, কোথাও খরা, কোথাও দাবানল। বিপদ ভিন্ন হলেও মূল কারণ একটাই— জলবায়ু সংকট।’ সূত্র: এমআইটি নিউজ
এমএল/