ইসরায়েলিদের সন্ত্রাসী ভাবতেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ: সাবেক প্রেসিডেন্ট


Janobani

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩:৩০ অপরাহ্ন, ২০শে এপ্রিল ২০২৫


ইসরায়েলিদের সন্ত্রাসী ভাবতেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ: সাবেক প্রেসিডেন্ট
ফাইল ছবি।

যুক্তরাজ্যের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের ইসরায়েল-বিরোধী মনোভাব কি কেবল ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ ছিল, না এর পেছনে লুকিয়ে ছিল ঐতিহাসিক ক্ষোভ ও কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব? সম্প্রতি ইসরায়েলের সাবেক প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিনের এক মন্তব্যে এ বিষয়ে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে।


এক অনুষ্ঠানে রিভলিন দাবি করেন, রানি এলিজাবেথ মনে করতেন, প্রত্যেক ইসরায়েলি হয় সন্ত্রাসী, নয়তো সন্ত্রাসীর সন্তান।  তিনি আরও জানান, রানি আন্তর্জাতিক কোনো প্রটোকল ছাড়া কখনোই কোনো ইসরায়েলি কর্মকর্তাকে বাকিংহাম প্যালেসে ঢুকতে দেননি।


বিশ্বের ১২০টির বেশি দেশ সফর করেছেন রানি এলিজাবেথ, জীবদ্দশায় ভ্রমণ করেছেন লাখ লাখ মাইল। অথচ ইসরায়েল ছিল তার ভ্রমণ তালিকার বাইরে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটি কেবল কাকতালীয় নয়, বরং স্পষ্ট বার্তা।


১৯৪০-এর দশকে ব্রিটিশ শাসনের সময় ফিলিস্তিনে ইহুদি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিদ্রোহ ও সহিংসতা অনেক ব্রিটিশ নেতার মতো রানিকেও প্রভাবিত করেছিল বলে মনে করেন ইতিহাসবিদেরা। ব্রিটিশ সেনা ও প্রশাসনিক বাহিনীর সদস্যদের ওপর চালানো হামলা এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদীদের উগ্র অবস্থান সম্ভবত রানির মনোভাব গঠনে প্রভাব ফেলেছিল।


ইসরায়েল সফর না করার বিষয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞার কথাও উঠে এসেছে বিভিন্ন সময়ে। তবে, বিশিষ্ট ইসরায়েলি সাংবাদিক ডেভিড লানদাও মনে করেন, রানি চাইলে এসব নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে সফর করতে পারতেন।


এই আলোচনা নতুন করে সামনে এসেছে এমন সময়, যখন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড লেমি গোপনে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, এবং তা নিয়ে ব্রিটিশ রাজনীতিতে বিতর্ক চলছে। এমন সময়ে রানির অবস্থানের পুনরুল্লেখ মধ্যপ্রাচ্যনীতি ও ব্রিটিশ রাজপরিবারের দীর্ঘমেয়াদি কূটনৈতিক অবস্থানকে স্মরণ করিয়ে দেয়।


রানি এলিজাবেথের ইসরায়েল-বিরোধী মনোভাব কেবল ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতিক্রিয়া, না কি রাজনৈতিক কৌশলের অংশ, সে বিতর্ক চলতে পারে। তবে, তার নিরপেক্ষতা ও দূরদর্শিতা সম্পর্কে যেভাবে বিশ্ব তাকে মনে রেখেছে, তাতে এটি স্পষ্ট—তিনি কূটনৈতিক সম্পর্কেও ছিলেন অসাধারণভাবে হিসেবি।