ঝিকরগাছায় প্রতিবেশী দাদার ধর্ষণে ৫ মাসের অন্তসত্ত্বা কিশোরী


Janobani

বিশেষ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, ৮ই মে ২০২৫


ঝিকরগাছায় প্রতিবেশী দাদার ধর্ষণে ৫ মাসের অন্তসত্ত্বা কিশোরী
প্রতীকী ছবি।

সেলিম হুসাইন রনি: যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের রায়পটল গ্রামের প্রতিবেশী দাদার ধর্ষণে ৫ মাসের অন্তসত্ত্বা ১৩বছর বয়সের কিশোরী। ঘটনার বিষয়ে ধামাচাপার চেষ্টায় কাজ করে চলেছে স্থানীয় মাতব্বরা বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে প্রতিবেশী ধর্ষক দাদা হল রায়পটল গ্রামের মৃত. নুর আলীর ছেলে ফজলুর রহমান ফজু (৬৫)। 


তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার হাজিরবাগ ইউনিয়নের রায়পটল গ্রামের দিনমজুর আমির হোসেন স্ট্রোক জনিত কারণে তিনি প্রতিবন্ধী হয়ে যাওয়ায় তার পরিবারের সদস্যরা জীবিকা অর্জনের জন্য এলাকার কিছু বাড়ীতে কাজ করে সংসার পরিচালনা করেন। তারই ধরাবাহিকতায় বাড়ির পর্শ্ববর্তী ফজলুর রহমান ফজুর বাড়ীতে কাজ করতেন প্রতিবন্ধী আমির হোসেনের অবুঝ ১৩ বছর বয়সের কিশোরী। এই কিশোরীকে বিভিন্ন সময়ে ফজুর লালসার শিকার বানিয়ে ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে কিশোরী ৫ মাসের অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বলে মেডিকেল পরিক্ষার পর বুঝতে পারেন অসহায় পরিবার। আর এই ঘটনা এলাকার মধ্যে প্রকাশ পেয়ে গেলে স্থানীয় মাতব্বর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিজান হাজীর মাধ্যমে একটা মিমাংসার চেষ্টা চলমান রয়েছে।


নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তিরা জানান, আপনারা যে তথ্য পেয়ে এসেছেন ঘটনাটি সত্য। তবে এ ঘটনার বিষয়ে আপনাদের স্থানীয় মাতব্বরা সামনের দিকে এগিয়ে নিতে দিবে না। বিয়ে দিবে, বাচ্চা নষ্ট করে, ৫ বিঘা জমি দিবে, আরাব কখনও ৩০ লক্ষ টাকার মাধ্যমে ঘটনার ধামাচাপার চেষ্টা চলছে। তবে উক্ত বিষয়ে কিশোরী পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে তার মেয়ে বাহিরের কারও সামনে আনছে না।


ঘটনার বিষয়ে কিশোরীর বাড়িতে গেলে কিশোরীর মা বলেন তার মেয়ে বাড়ির পাশে আছেন। মেয়েকে ডাকতে গেলে পার্শ্ববর্তী মেয়ের চাচাতো ভাই নয়নের স্ত্রী রুমি ভাবী তাকে সংবাদকর্মীদের সামনে আসতে দেননি। পরবর্তীতে রুমি সংবাদকর্মীদের সামনে এসে বলেন মেয়ের অভিভাবক সহ সবাই বাঁকড়া বাজারের মিজান হাজীর ওখানে যান। ওখানে গেলে সব তথ্য পাওয়া যাবে।


প্রতিবেশী ধর্ষক দাদা ফজলুর রহমান ফজু এর সাথে যোগাযোগ করতে তার বাসায় গেলে তিনি ঘর থেকে বের না হয়ে। তার স্ত্রীকে দিয়ে সংবাদকর্মীদের কে জানান, ঐ ছেমরির বহু লোকের সাথে সম্পর্ক। কিন্তু ইনি পাড়াপ্রতিবেশী হিসেবে দাদা হয়। আমরা সহ্য করতে পারছি না। সব গ্রামের সড়যন্ত্র। ওরা বেশ কিছু দিন আগে সড়যন্ত্র করে আমার কবুতর মেরে ফেলেছিল। এটা নিয়ে আমি ক্যাম্পে বিচার দিয়ে ছিলাম। তারপর থেকে ওদের আমাদের উপর রাগ। যা হোক অন্যায় আমাদেরই। ওরা বলতে চাচ্ছে আমাদের মেয়ের পেটে বাচ্চা তোমাদের নিতে হবে। বাচ্চা ফেলানো যাবে না। মেয়ে মুখ দিয়ে বলেছে। এখন এলাকার লোকজন এই বিষয়ে বসতে চেয়েছে।


স্থানীয় মাতব্বর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মিজানুর রহমান ওরফে মিজান হাজী বলেন, আমরা সর্বচ্চো চেষ্টা করছি মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে। আইনের আশ্রয়ে না গিয়ে, আপনারা ধর্ষকের কি করতে চান ? সাংবাদিকের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা সামাজিক ভাবে ধর্ষকের শাস্তি ব্যবস্থা করবো।


উপজেলা মহিলা বিষয়ক অফিসার অনিতা মল্লিক বলেন, আমি ঢাকায় প্রশিক্ষণে আছি। তদন্ত করে দেখছি বিষয়টি। 


থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বাবলুর রহমান বলেন, এ ঘটনার বিষয়ে আমাদের নিকট কোন অভিযোগ আসেনি।


উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভুপালী সরকার বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি ওসি সাহেব কে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।


আরএক্স/