চট্টগ্রামে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশে বিশৃঙ্খলা, ক্ষুব্ধ মাল্টিমিডিয়া


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৮:২৪ অপরাহ্ন, ১০ই মে ২০২৫


চট্টগ্রামে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশে বিশৃঙ্খলা, ক্ষুব্ধ মাল্টিমিডিয়া
ছবি: প্রতিনিধি

• মঞ্চের সামনে চেয়ার সরিয়ে দাঁড়িয়ে বক্তব্য শুনলেন চট্টগ্রামের নেতারা


চট্টগ্রামে বিএনপির ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে আয়োজনে শৃঙ্খলার অভাব এবং মঞ্চে সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার। একদিকে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য শোনার জন্য মঞ্চের সামনে যে কাঠামো তৈরি করা হয়েছিল, তা ভেঙে পড়ে মিছিলকারীদের চাপে। অন্যদিকে, মহিলা দলের নেত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় সমাবেশ ছেড়ে চলে যায় এবং সাংবাদিকদের অপমানজনকে অসধ আচরণের শিকার হতে হয়।


আরও পড়ুন: মাওলানা রইস হত্যা: চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ


সিনিয়র নেতারা দাঁড়িয়ে শুনলেন বক্তৃতা। সমাবেশের মঞ্চের সামনে চট্টগ্রাম বিভাগের বিএনপি ও সিনিয়র নেতাদের জন্য নির্ধারিত আসন ছিল। তবে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মিছিলকারীরা মঞ্চের সামনে ভিড় করে বসার জায়গা দখল করে নেয়, ফলে চেয়ার সরিয়ে ফেলতে হয়। এতে সিনিয়র নেতাদের দাঁড়িয়ে থেকে বক্তব্য শুনতে হয়। কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মহিলা দলের অনেক নেত্রীও নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে মাঝপথেই অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন।


অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক সিনিয়র নেতা স্বীকার করেন, আয়োজনে কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়েছিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, ‘শৃঙ্খলার ঘাটতি ছিল, তবে এটি নেতাদের অসম্মান নয়, বরং কিছু সাংগঠনিক ভুলের ফল।’


সমাবেশে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঘটে অপ্রীতিকর ঘটনা। ফটো সাংবাদিকদের মধ্যে দেশ রূপান্তর, খবরের কাগজ, বাংলানিউজ২৪, কালবেলা–সহ একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের মঞ্চে ছবি তুলতে বাধা দেওয়া হয়। এমনকি কয়েকজন ফটো সাংবাদিককে ধাক্কা দিয়ে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দিতেও দেখা যায়।


মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকদের মধ্যেও আজকের পত্রিকা, সিএইচডি, কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ টাইমস, দৈনিক জনবাণী, যায়যায়দিন, সিটিজি নিউজ–সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। অনেককে ‘অনলাইন সাংবাদিক’ বা ‘মোবাইল সাংবাদিক’ বলে তাচ্ছিল্য করা হয় এবং হেনস্তার শিকার হতে হয়।


এই ধরনের আচরণে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, ‘এটা শুধু পেশাগত দায়িত্বে বাধা নয়, বরং সাংবাদিকতার প্রতি অশ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ।’


দেশের প্রথম সারির পত্রিকা ও অনলাইন মাল্টিমিডিয়ার ফটো ও মোবাইল সাংবাদিকরা জানান, ছবি ও ভিডিও সংগ্রহে বাধা দেওয়া হয়েছে। মঞ্চে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা মোবাইল ফোনে ফুটেজ নিতে বাধা দেন এবং ‘মোবাইল সাংবাদিক’ বলে কটাক্ষ করেন।


আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বর্ষবরণের মঞ্চ ভাঙচুর


একজন মোবাইল সাংবাদিক বলেন, ‘আমরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হয়েছি। আমাদের পেশাগত পরিচয় নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।’


চট্টগ্রামের স্থানীয় সাংবাদিকরা বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বলেন, জাতীয় রাজনীতির এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশে সাংবাদিকদের প্রতি এমন আচরণ দুঃখজনক এবং অগ্রহণযোগ্য।


এসডি/