পা দিয়ে লিখে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলেন মানিক


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:২৭ অপরাহ্ন, ১২ই মে ২০২৫


পা দিয়ে লিখে বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলেন মানিক
মানিক রহমান। ছবি: প্রতিনিধি

পা দিয়ে লিখে হাজী মুহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) চান্স পেয়েছেন শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মানিক রহমান। হাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষায় ‘বি’ ইউনিটে মেধা তালিকায় ১৯২তম স্থান অধিকার করেছেন তিনি। 


আরও পড়ুন: সুইপার শুন্য থাকায় কুড়িগ্রামের ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল যেন নিজেই রোগী


রবিবার (১১ মে) দুপুরে ফলাফল প্রকাশিত হলে মানিকের এ সাফল্যের ধারাবাহিকতায় বাবা-মা,আত্মীয়-স্বজন,পাড়া প্রতিবেশীসহ সবাই আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে।


মানিক রহমান ২০২২ সালে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০২৪ সালে নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।


মানিক রহমানের বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামে। ওই গ্রামের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও সহকারী অধ্যাপক মরিয়ম বেগমের বড় ছেলে তিনি। শুধু এসএসসি ও এইচএসসিতে নয়, বাবা-মা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় নিজের আত্মবিশ্বাস ও মনোবলকে কাজে লাগিয়ে পিইসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এবং জেএসসিতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে সবার মুখ উজ্জ্বল করেছিলেন মানিক রহমান।


এছাড়াও পা দিয়ে মোবাইল চালানো এবং কম্পিউটার টাইপিংয়ে যথেষ্ট পারদর্শী তিনি। তাই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ভবিষ্যতে একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায়ের কারণে অবশেষে তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন পূরণের দ্বার উন্মোচিত হলো।


মানিকের বাবা মিজানুর রহমান ও মা মরিয়ম বেগম জানান, আমাদের দুই ছেলের মধ্যে মানিক বড়। ছোট ছেলে মাহীম নবম শ্রেণিতে পড়ে। মানিক জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার দুটি হাত নেই, একটি পা অন্যটার চেয়ে অনেকাংশে খাটো। কিন্তু প্রতিবন্ধী হলেও আমরা তাকে প্রতিবন্ধী মনে করি না। হাত না থাকায় ছোট থেকেই আমরা তাকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। পা দিয়ে লিখলেও তার লেখা অনেক সুন্দর এবং পড়াশোনায় সে খুবই মনোযোগী। সবার দোয়ায় আজ তার কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নের দ্বার উন্মোচিত হলো। সবাই দোয়া করবেন সে যেন একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হতে পারে।


আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে চাঁদার টাকা না পেয়ে বাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ


মানিক রহমান বলেন,আমার দুটি হাত না থাকলেও আল্লাহর অশেষ রহমত, বাবা-মা ও শিক্ষকদের দোয়া এবং অনুপ্রেরণায় আমি পিইসি থেকে এইচএসসি পর্যন্ত সব পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। এ বছর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মেধা তালিকায় ১৯২তম স্থান অধিকার করেছি। সবাই দোয়া করবেন আমি যেন একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারি।


এসডি/