নোয়াখালীতে পশু কোরবানি করতে গিয়ে আহত ১২০


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০:০৬ অপরাহ্ন, ৮ই জুন ২০২৫


নোয়াখালীতে পশু কোরবানি করতে গিয়ে আহত ১২০
ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো নোয়াখালী জেলাতেও কুরবানির পশু জবাইয়ের প্রস্তুতি তুঙ্গে ছিল। তবে কোরবানির দিন দেখা গেল পুরোটাই ভিন্ন চিত্র— একদিনের জন্য কসাই সেজে অনেকেই নামেন, যাদের কোরবানির পশু জবাইয়ের অভিজ্ঞতা একেবারেই ছিল না। ফলে মাত্র ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আহত হয়েছেন অন্তত ১২০ জন।


রবিবার (০৮ জুন)  দুপুরে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রাজিব আহমেদ। 


নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মোট ১৯৯ রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ডেলিভারি রোগী ছিলেন ১৫ জন। ও.পি.সি. পয়জনিংয়ের কারণে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮ জন। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ১৮ জন রোগী। ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ১২ জন, আর সাধারণ মেডিসিন বিভাগে সেবা নিয়েছেন ২৬ জন।


আরও পড়ুন: ঈদের লম্বা ছুটিতে পর্যটকে মুখর খাগড়াছড়ি


তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ঈদের দিনে হঠাৎ কসাই সেজে মাংস কাটতে গিয়ে আহত হয়েছেন মোট ১২০ জন। হাত কাটা, পা কাটা কিংবা ছুরি ফসকে গিয়ে অন্যান্যভাবে আহত হয়ে তারা চিকিৎসা নিতে এসেছেন হাসপাতালে। 


মো. হেলাল উদ্দিন নামে জেলা শহরের এক বাসিন্দা গণমাধ্যমকে বলেন, আহতদের বেশিরভাগই তরুণ ও মধ্যবয়সী ব্যক্তি। যারা সাধারণত চাকরি বা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। কোরবানির দিন পরিবার বা পাড়ার সম্মান রক্ষার্থে কসাইয়ের ভূমিকা নিতে গিয়ে নিজেরাই পড়ে যান বিপদে। কারও হাতে ছুরি লেগেছে, কারও পা কেটে গেছে, কেউবা পশু জবাইয়ের সময় পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন গুরুতরভাবে।

 

সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. লিটন গণমাধ্যমকে বলেন, আগে কসাই আসত, এবার সময়মতো পাইনি। তাই নিজেরাই চিন্তা করলাম কাটব। কিন্তু হাত ফসকে ছুরি গিয়ে লাগে আঙুলে। এখন হাসপাতালে সেলাই নিতে হলো। হাসপাতালে এসে দেখি সব আমার মতো রোগী।


আরও পড়ুন: কক্সবাজারে রোদ আর সাগরের উত্তাপেও মাতোয়ারা পর্যটক


নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসকরা গণমাধ্যমকে বলেন,‌ এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় ছুরি-কাঁচির আঘাতে আহত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। কিছু রোগীর আঘাত গুরুতর। বেশিরভাগকে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা দিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। 


নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) রাজিব আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, সামাজিক বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে, অভিজ্ঞ কসাইয়ের অভাবে অনেক পরিবার বাধ্য হয়ে নিজেরাই পশু জবাইয়ে অংশ নিচ্ছেন। প্রতিবছর ঈদুল আজহার দিন পশু জবাই করার সময় অসাবধানতাবশত ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বহু লোকজনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ কাজটি কেবল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বা অভিজ্ঞ ব্যক্তিরাই করা উচিত। অন্যথায় শুধু নিজেরই নয়, আশপাশের মানুষকেও ঝুঁকিতে ফেলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২০ জনকে সেবা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জনের মতো ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে অনেকেই ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। 


এমএল/