কোন পথে সাংবাদিক রুবেল হত্যা মামলা?


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


কোন পথে সাংবাদিক রুবেল হত্যা মামলা?

কুষ্টিয়ায় সাংবাদিক রুবেল হত্যাকান্ড ঘিরে প্রতিনিয়ত ধুম্রজালের সৃষ্টি হচ্ছে। এখনো এই হত্যাকান্ডের মূল রহস্য জানাতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী র‌্যাব। কুষ্টিয়া কাজী সোহান ও জুয়েল নামের দুই সন্দেহভাজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর পুলিশ মূল হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ইমনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এমন গ্রেফতারের পর থলের বিড়াল বেরিয়ে আসার আশংকায় অনেকেই গাঁ ঢাকা দিয়েছে বলে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা জানায়। 

পুলিশ সুপার খাইরুল আলম প্রেস ব্রিফিং-এ বলেন, ‍“খুনিরা যেখানেই পালিয়ে থাকুক না কেন, মাটির নিচে থাকলেও গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে পুলিশ।” 

এরপর প্রথম ২ আসামির ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়। পরে আরেক আসামি ইমনের ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। মামলা ঈশ্বরদী নৌ পুলিশের কাছে। এখন পর্যন্ত এই মামলা পিবিআই গ্রহণ করেনি। 
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি’র সাথে কুষ্টিয়ায় সর্বস্তরের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এক সাক্ষাতে মিলিত হলে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলে মামলা শীঘ্রই স্থানান্তরের সুপারিশ করেন। দুঃখজনক হলেও সত্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও মামলাটি এখনো নৌ পুলিশ থেকে পিবিআই গ্রহণ করেনি। সর্বস্তরের সাংবাদিক কুষ্টিয়ায় মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয় ঘেরাও, বিক্ষোভ সমাবেশ, কলম বিরতি সহ নানা কর্মসূচি পালন করে। কোন কর্মসূচিই যেন আমলে নিচ্ছে না প্রশাসন। 

সাংবাদিক রুবেল হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী বাকি ঘাতকেরা আদৌও গ্রেফতার হবে কিনা, মাস্টারমাইন্ড গ্রেফতার পর্যন্ত পৌঁছাবে কিনা এ নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সাংবাদিক সমাজসহ সাধারণ মানুষের মাঝে। কুষ্টিয়ায় স্বাধীনতার পরে এটাই প্রথম সাংবাদিক হত্যাকান্ড। ১৯৬৫ সালে কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক জাগরণ পত্রিকা পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আয়ুব খানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের দায়ে ওই পত্রিকার সম্পাদক নারায়ন কৃঞ্চ মজুমদারকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয় এবং তার পত্রিকা বাতিল করা হয়। এই ঘটনার পর সাংবাদিক রুবেল হত্যাকান্ড স্বাধীন বাংলাদেশের কুষ্টিয়ায় প্রথম কোন সাংবাদিক হত্যা। হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িতদের আইনের আওতায় এনে তাদের স্বীকারোক্তিতে মূল পরিকল্পনাকারীদের গ্রেফতার শুধু কুষ্টিয়া নয় সারা বাংলাদেশের সাংবাদিক সমাজের দাবি। 

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাব কেপিসি ও সাংবাদিক ইউনিয়ন কুষ্টিয়ার সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, “বিভিন্ন সংগঠন নিজ নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি পালন করছে। আমরা জাতীয় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে কুষ্টিয়ায় এনে রুবেল হত্যার প্রতিবাদে এবং এই হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে সাংবাদিক মহাসমাবেশের ডাক দিবো। সেখানে ঢাকা, খুলনা এবং রাজশাহী সহ দেশের বিভিন্ন এলাকার সাংবাদিকদের জমায়েত করা হবে।” 

তিনি আরো বলেন, “বিভিন্ন প্রকৌশল দপ্তরে যে তথ্য চেয়ে সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেল কে জীবন দিতে হয়েছে ইতিমধ্যে আমরা যে সকল দপ্তরগুলোতে তথ্যপ্রাপ্তির আবেদন ফরমে আবেদন করেছি। এই আবেদনের পর বিভিন্ন সাংবাদিকদের হুমকি ধামকি শুরু হয়েছে। রুবেল হত্যাকান্ডের মূল ঘটনা উদঘাটন না হওয়া পর্যন্ত আমরা সাংবাদিকরা ঘরে ফিরবো না।”

এসএ/