মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই জাহারার


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই জাহারার

প্রায় ৪৭ বছর বয়সী মোসা. জাহানারা বেগম। তার স্বামী আবু খাঁ লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পরপারে পাড়ি দিয়েছেন প্রায় ১৪ বছর আগে। এরপর থেকে নিরুপায় হয়ে ভোলার লালমোহনের সূর্যের হাসি ক্লিনিকের সামনে সড়ক ও জনপথ বিভাগের খাস জমিতে এক সন্তান নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন জাহানারা বেগম। তার মাথা গোঁজার জন্য যে বসতঘরটি রয়েছে তাও জরাজীর্ণ। ঘরটির চারপাশে হোগলা পাতা দিয়ে বেড়া দেয়া, আর চালায় নষ্ট হওয়া টিনের ওপর দেয়া পলিথিন। যেকোনো মুহুর্তে ভেঙে পড়তে পারে ঝুপড়ি ঘরটি। জাহানারার কাছে এ যেন প্রতিদিন মৃত্যুর প্রহর গণনা!

জানা যায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে লালমোহন উপজেলায় মোট সাড়ে ৫'শ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর প্রদান করা হয়। অথচ এত অসহায় হওয়ার পরেও এই হতভাগি জাহানারার ভাগ্যে জোটেনি প্রধানমন্ত্রীর উপহারের একটি ঘর।

আকুতি নিয়ে জাহানারা বেগম জনবাণীকে বলেন, ‍“এরমধ্যে কত মানুষকে সরকারিভাবে ঘর দেয়া হয়েছে। আমিও একটি ঘরের জন্য ইউএনও স্যারের কাছে কয়েকবার গিয়েছি। তিনি দিবেন বলেছে, তবে এখন পর্যন্ত আমি ঘর পাইনি। বর্তমানে আমি যে ঘরটিতে বাস করছি সে ঘরটির খুবই খারাপ অবস্থা। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে ঘরের ভেতরে। তখন সন্তানকে নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটে আমার। আবার জমিটুকুও খাস।”

জাহানারা আরও বলেন, “স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে মানুষের বাসায় ঝিয়ের কাজ করে কোনোভাবে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছি। এখন বয়স হয়েছে। শরীরেও বাসা বেঁধেছে অনেক অসুখ। তাই এখন আর ঠিকমত কাজও করতে পারি না। যার জন্য সরকারের কাছে দাবী; আমাকে একটি বসত ঘর নির্মাণ করে দেয়াসহ নিয়মিত চাল সহায়তা পেতে ভিজিএফ বা ভিজিডির একটি কার্ড করে দেয়ার। তাহলেই মরণ পর্যন্ত একটু ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারবো।”

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পল্লব কুমার হাজরা জনবাণীকে বলেন, “সড়ক ও জনপথের ওই স্থানে যারা বাস করছে তাদের সকলকে ডাকা হয়েছে। ডেকে তাদেরকে সরকারি আশ্রয়ণের ঘর দেয়ার কথাও বলা হয়েছে। এরমধ্যে অনেককে পৌরসভার ভেতরেও ঘর দেয়া হয়েছে। যারা বাদ পড়েছে তাদেরকে উপজেলার অন্যান্য আশ্রয়ণগুলোতে যাওয়ার জন্য বললে তারা রাজি হয়নি। যার জন্যই হয়তো জাহানারা ঘর পাননি। তারপরেও সামনে এধরনের কোনো সুযোগ আসলে তাকে ঘর দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।”

এসএ/