এক বছরে বিসিএস শেষ করার উদ্যোগ, প্রতি বছর হবে একটি বিসিএস
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২

প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে এই বিসিএসে নিয়োগের জন্য প্রার্থী নির্বাচন করতেই প্রায় তিন বছর লেগে যাচ্ছে। এরপর নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে যাচাই (ভেরিফিকেশন), স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে চাকরির প্রজ্ঞাপন জারি হতে কমপক্ষে আরও এক বছর লাগবে। অর্থাৎ বিসিএসে চাকরি পেতে একজন তরুণকে কমপক্ষে চার বছর অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সঙ্গে কবে কোন পরীক্ষা নেওয়া হবে ও ফলাফল প্রকাশ করা হবে সেটি উল্লেখ করার দাবি বিসিএস পরীক্ষার্থীদের।
১৯৯৮ সালে ২২তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার বলেন, “স্বপ্ন ছিল বিসিএস ক্যাডার হলে দেশের জন্য কাজ করবো। আমাদের সময়ে একটি বিসিএস পরীক্ষা শুরু থেকে শেষ হতে চার থেকে পাঁচ বছর সময় লেগে যেত। সে কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী বিসিএসের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে বিদেশ পর্যন্ত চলে যেতেন।”
পিএসসি সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ২ হাজার ৫৪৫টি ক্যাডার পদের জন্য ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন আবেদন করেন। চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয় ২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি। ৩৬তম বিসিএস পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি ২০১৫ সালের ৩১ মে জারি করা হয়। ২ হাজার ৭৫০টি পদের বিপরীতে ২ লাখ ১১ হাজার ৩২৬ জন প্রার্থী আবেদন করেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়। ৩৭তম বিসিএসে ১ হাজার ৩৪২টি পদে নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশ করে পিএসসি। ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর ফলাফল প্রকাশ হয়।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ৪০তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। ১ হাজার ৯০৩টি ক্যাডার পদে নিয়োগে ফলাফল প্রকাশ করা হয় ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি। ২০১৯ সালে ৪১তম বিসিএসসে ২ হাজার ১৬৬টি ক্যাডার পদে নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা হলেও এখানো তার ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। ৪৩ ও ৪৪তম বিসিএস পরীক্ষা চলমান।
পিএসসির পরীক্ষা শাখা থেকে জানা যায়, নির্ভুল খাতা মূল্যায়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২১ দিনের মধ্যে ২০০ খাতা মূল্যায়নের সময় দেওয়া হলেও কেউ কেউ অনেক বিলম্বে জমা দেন। অনেক খাতায় বৃত্ত ভরাটসহ নানা ধরনের ভুলভ্রান্তি ধরা পড়ছে। সেগুলো পরীক্ষকের কাছে পুনরায় পাঠিয়ে সংশোধন করা হয়। ৪১তম বিসিএসে ৩১৮ পরীক্ষকের গাফিলতি বা দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে পিএসসি।
এসব ত্রুটি দূর করতে পরীক্ষকদের জন্য গত ২৮ আগস্ট থেকে নিয়মিত ব্রিফিংমূলক সেমিনারের আয়োজন করছে পিএসসি। সেখানে ধাপে ধাপে পরীক্ষকদের ডেকে খাতা মূল্যায়নে যেসব ভুল চিহ্নিত হয়েছে তা প্রজেক্টরে দেখানো হচ্ছে। যারা সেমিনারে আসছেন শুধু তাদের ৪৩তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ১০০টি করে খাতা মূল্যায়ন করতে দেওয়া হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বলেন, আগে পরীক্ষকদের ২০০ খাতা ২১ দিনের মধ্যে মূল্যায়ন করতে দেওয়া হলেও অনেকে সেটি ছয় মাস পার করে দিতেন। তার মধ্যেও ভুল পাওয়া যেত। বর্তমানে সেটি পরিবর্তন করে ১০০টি খাতার জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, নির্ভুল খাতা মূল্যায়ন ও নির্ধারিত সময়ে বুঝিয়ে দিতে নতুন কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেজন্য আমাদের প্ল্যানিং, ইচ্ছা ও লক্ষ্যমাত্রা পরীক্ষকদের জানা প্রয়োজন। সে কারণে পিএসসিতে নিয়মিত ব্রিফিং সেমিনারের আয়োজন করা হচ্ছে। এতে যারা অংশ নিচ্ছে তাদের ৪৩তম বিসিএসের খাতা মূল্যায়ন করতে দেওয়া হচ্ছে। যারা আমাদের মিশন-ভিশন জানবে না তারা কীভাবে তা মূল্যায়ন করবেন।
আরএক্স/