জীবননগরে বিজিবির সোর্স হত্যা মামলার পলাতক আসামি গ্রেফতার


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২:১০ পূর্বাহ্ন, ৩রা জানুয়ারী ২০২৩


জীবননগরে বিজিবির সোর্স হত্যা মামলার পলাতক আসামি গ্রেফতার
আসামি আমিন হোসেন

চুয়াডাঙ্গা জীবননগর থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে বিজিবির সোর্স তারিক হোসেন হত্যা মামলার পলাতক আসামি আমিন হোসেনকে (৪৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। 


রবিবার (১ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে মহেশপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার কর হয়। গ্রেফতারকৃত আমিন হোসেন (৪৫) গয়েশপুর গ্রামের ইনতাজ আলীর ছিলে ও  সীমান্ত ইউনিয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা যুবদের আহবায়ক মঈন উদ্দিন ময়ের ছোটভাই।


পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের বড় পুকুর পাড়ার রবিউল ইসলাম ওরফে রবগুল হোসেনের ছেলে তারিক হোসেনকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবী করে তার স্ত্রী জেসমিন আখতার বাদী হয়ে ১৪ ডিসেম্বর সকালে  ৬ জনের নাম উল্লেখ করে জীবননগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 


মামলা দায়ের পর থেকে এজাহার ভুক্ত আসামিরা কৌশলে এলাকা ছেড়ে অন্যত্র গা ঢাকা দিলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই নাহিরুল ইসলাম ও এস আই রায়হান সঙ্গীয় ফোর্সসহ পার্শ্ববর্তী মহেশপুর উপজেলা থেকে রোববার রাতে আমিন হোসেনকে গ্রেফতার করেন।


সূত্র মতে আরো জানা যায়, মাদক মামলার আসামি আনার হোসেনের সহযোগীরা এবং দুটি স্বর্ণ চোরাচালান মামলার আসামিরা যৌথভাবে তারিক হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করে দুই সপ্তাহ আগে। পূর্বপরিকল্পনা মাফিক সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় গয়েশপুর গ্রামের মাহম্মদ আলীর ছেলে আতিয়ার রহমান মালিথা ওরফে আতি (৪২) কৌশলে তারিক হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর গয়েশপুর সীমান্তের ৬৮নং মেইন পিলার এবং ৬নং সাব পিলারের কাছে দোয়াল মাঠের একটি ভুট্টা ক্ষেতের মধ্যে তারিক হোসেনকে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই ওৎ পেতে থাকা আতিয়ার রহমান মালিথার ৬ জন সহযোগী (মামলার স্বার্থে নামগুলো প্রকাশ করা হলো না) তারিক হোসেনকে দেখামাত্র পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ধারালো হাসুয়া দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় তারিক হোসেনের চিৎকারে ওই এলাকায় অবস্থান নেয়া আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন সোর্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মুমূর্ষ অবস্থায় তারিক হোসেনকে উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।


পরবর্তীতে গত মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তারিক হোসেনের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তারিক হোসেন তার হত্যাকারীদের নাম স্ত্রী জেসমিন খাতুনসহ হাসপাতালে উপস্থিত অনেকের সামনেই স্বীকারোক্তি দিয়ে গেছেন।


নিহত তারিক হোসেনের স্ত্রী জেসমিন খাতুন জানান, প্রায় ১৫ দিন আগে থেকেই হত্যাকারিরা বিভিন্নভাবে তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলো। এক পর্যায়ে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক সোমবার রাতে তার স্বামীকে হত্যা করে ওই চক্র। তিনি তার স্বামীর হত্যাকারিদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।


তারিক হত্যা মামলায় আমিন হোসেনের আগে  সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের পাশ থেকে এজাহার নামীয় ৪নং আসামি গয়েশপুর গ্রামের মাহম্মদ আলীর ছেলে আতিয়ার রহমান মালিথা ওরফে আতিকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করেন।  


গ্রেফতারকৃত আসামিকে সোমবার চুয়াডাঙ্গা আদালতে সোপর্দ করা হবে।


জীবননগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  আব্দুল খালেক জানান, তারিক হোসেন হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।