হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করেই চলছে বোরো ধান রোপণের কাজ


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১:৫৫ অপরাহ্ন, ১৮ই জানুয়ারী ২০২৩


হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করেই চলছে বোরো ধান রোপণের কাজ
গরু দিয়ে হাল চাষ হচ্ছে

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ঘন কুয়াশার চাদরের ঢেকে গেছে চারপাশ মাঠে যেন বরফ গলানো পানি। কুড়িগ্রামের  আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে আজ বুধবার (১৮ জানুয়ারি) কুড়িগ্রাম জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই কনকনে ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে সোনার ফসল ফলাতে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। জমিতে সেচ, হালচাষ, সার প্রয়োগ, বীজ-চারা উঠানো ও প্রস্তুতকৃত জমিতে চারা রোপণ করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে কৃষকরা


উপজেলা কৃষি অফিসের দেয়া তথ্যে জানা যায়, উপজেলায় ১০টি ইউনিয়নের চলতি মৌসুমে ১৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে ইরিবোরো চাষের লক্ষ‍্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। 


সরজমিন দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন মাঠে পুরোদমে বোরো ধান রোপণের কাজ চলছে। তীব্র শীতের মাঝেও কাদাপানির মধ্যে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক। উপজেলার সদর ইউনিয়নের নলেয়া গ্রামের মাঠে বিঘাপ্রতি ১ হাজার ৮শ টাকা চুক্তিতে ধান রোপণের কাজ করছে।


কৃষক মোহাম্মদ  আলী বলেন, চারা তৈরি হয়ে গেছে এজন্য শীতের মধ্যেও ধান রোপণ করে ফেলছেন। শীত একটু কমে গেলেই এই ধান গাছ দ্রুত বেড়ে উঠবে। একই গ্রামের কৃষক হাবীর আলী জানান, তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করবেন। ইতোমধ্যে দুই বিঘা শুরভী ১(হাইব্রিট ধান) রোপণ শেষ হয়েছে। একটু আগেভাগে ধান রোপণ করায় খরচ একটু কম হচ্ছে বলে তিনি জানান।


পাইকেরছড়া  গ্রামের মজনু মিয়া  জানান, চার বিঘা জমি রোপণ হয়ে গেছে। এখনো তিন বিঘা রোপণ করতে হবে। সেসব জমিতে পানি দিয়ে চাষ চলছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে সব রোপণ হয়ে যাবে। ইসলামপুর গ্রামের শের আলী জানান, তিনি দশ বিঘা জমিতে রোপণ শেষ করেছেন। আরো দুই বিঘা রোপণ করার জন্য জমি চাষ করেছেন।

 

সরজমিনে দেখা যায়, শীতের মধ্যেও ধান রোপণের কাজ করছেন ইব্রাহিম, শাহ আলম, আলতাফ, সোহাগ, জাহিদুল, আলমসহ অনেক কৃষক। কৃষক শাহ আলম বলেন, আমাদের কাজই এটা। শীত থাকলেও কিছু করার নেই। কাজের সময় কাজ করতে হবে। তবে প্রচণ্ড শীত আর বাতাসে কষ্ট হচ্ছে। হাত-পা বাঁকা হয়ে যাচ্ছে শীতে।


পাইকেরছড়া এলাকার  নলকূপের মালিক আবুছালেহ বলেন, আমার স্কিমে ৫৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ হবে। পানি ছেড়ে দিয়েছি কৃষকরা ইচ্ছামতো জমি চাষ করে ধান রোপণ করছে। শীতের কারণে পানিতে  কাজ করা খুব কষ্ট হচ্ছে। 


উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার শাহ আপেল মাহমুদ জানান, সরকারের পক্ষ থেকে উপজেলায় ৫ হাজার কৃষককে উফশী জাতের ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার প্রণোদনা হিসেবে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৩ হাজার ৩০০ কৃষককে ২ কেজি উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, উপজেলায় পুরোদমে বোরো ধান রোপণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। তবে প্রচণ্ড শীতের কারণে রোপণ কাজ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।


জেবি/এসবি