মেয়ের শ্লীলতাহানির বিচার না পেয়ে ক্ষোভে বাবার আত্মহত্যা
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২:২৯ পূর্বাহ্ন, ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ২০২৩
পঞ্চগড়ে কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে তুলে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন পলাশ চন্দ্র বর্মন (৩০) নামের এক যুবক। এঘটনার বিচার দাবি করলে বিষয়টি বাড়াবাড়ি না করার পরামর্শ দিয়ে সুরাহার আশ্বাস দেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। কিন্তু ঘটনার ১৫ দিন পার হলেও কোন সুরাহা পাননি ভুক্তভোগি বাবা। বারবার চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হয়েও কোন বিচার না পেয়ে আত্মহত্যা করেছেন গজেন চন্দ্র বর্মন (৫০) নামের ওই ব্যক্তি।
ঘটনাটি পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের লাখেরাজ ঘুমটি এলাকার। গজেন চন্দ্র বর্মন ওই এলাকার মৃত নেভুরাম বর্মনের ছেলে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে গলায় চাঁদর পেচিয়ে বাড়ির অদুরে আবাদি জমির পাশের একটি পাখুঁরী গাছের ডালের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন তিনি। রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।এদিকে, আত্মহত্যার জন্য মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র বর্মনকে দায়ী করছেন মৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি, চেয়ারম্যানের দায়িত্বহীনতার কারণে মেয়ের শ্লীলতাহানির বিচার না পাবার আশঙ্কায় ক্ষোভে আত্মহত্যা করেছেন গজেন বর্মন।
গজেন বর্মনের ছেলে সুজন বর্মন বলেন, তার কলেজ পড়ুয়া ছোট বোনকে গত ১৭ জানুয়ারি রাতে প্রতিবেশি শ্যামল চন্দ্র বর্মনের ছেলে পলাশ চন্দ্র বর্মন অসৎ উদ্দেশ্যে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে টেনেহিচড়ে নিয়ে যাচ্ছিলো। পরে পরিবারের লোকজন দেখে ফেলায় পলাশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে পলাশ সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এতে মারাত্মকভাবে আহত হন তার বোন।
চিকিৎসাধীন ছিলেন পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালেও।সুজন বর্মন আরো বলেন, বিষয়টি জানাজানি হলে আমাদের পারিবারিকভাবে সম্মানহানি হয়। পরে আমরা পলাশের বিচার দাবি করলে চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র বর্মন আমাদের আশ্বস্থ করেন বিষয়টি সুরাহা করবেন বলে। কিন্তু এক সপ্তাহ অতিবাহিত হতে চললেও কোন উদ্যোগ নেননি চেয়ারম্যান। পরে গত ২৪ জানুয়ারি চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দেই।
বুধবার ছিলো ইউনিয়ন পরিষদে বসার ধার্য তারিখ। সেখানেও বসা হয়নি বলে আমরা ন্যায় বিচার নিয়ে শঙ্কিত ছিলাম। সেই আশঙ্কা থেকেই রাতে আমার বাবা কাউকে কিছু না বলে আত্মহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র বর্মন বলেন, আমি অভিযোগ পেয়ে উভয়পক্ষকে নোটিশ করেছি। গত ১ ফেব্রয়ারি বসার কথা ছিলো। কিন্তু অভিযোগকারিরাই আসেননি। না আসলে কিভাবে সুরাহা করবো? আর আত্মহত্যার খবর পেয়ে আমি তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তবে কেন আত্মহত্যা করেছে তা জানিনা। পঞ্চগড় সদর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ মিঞা মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পূর্বের কোন বিষয়ে আমরা অবগত নই। তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরএক্স/