নাব্যতা হারিয়ে জলঢাকার নদী এখন ফসলি জমি


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:৩৬ পূর্বাহ্ন, ৭ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩


নাব্যতা হারিয়ে জলঢাকার নদী এখন ফসলি জমি
নাব্যতা হারিয়ে জলঢাকার নদী এখন ফসলি জমি

নদীমাতৃক বাংলাদেশের সব জায়গার মত নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে অন্তত ১০টি নদী। কিন্তু দখল, দূষণ ও নাব্যতা হারিয়ে এসব নদীগুলো এখন বালুচরে পরিণত হয়েছে।


উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা নদীগুলো দিয়ে এক সময় বিভিন্ন স্থান থেকে পণ্য-সামগ্রী আমদানি-রফতানি করা হতো। বর্ষাকালে কিছু ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল করতে দেখা গেলেও এখন দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। 


বর্তমানে নদী সমূহ ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। দখল, দূষণ আর নাব্যতা হারিয়ে নদীসমূহ বিলীনের পথে। উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের বড়ঘাট, শৌলমারী,ডাউয়াবাড়ী, বালাগ্রাম, গোলমুন্ডা, শিমুলবাড়ী, খটামারা ইউনিয়নসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে থাকা নদীগুলো প্রভাবশালীদের দখল আর খননের অভাবে এখন বালুচরে পরিণত হয়েছে। এতে পানির অভাবে চাষাবাদ করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। 


বর্ষাকালে বন্যার পানি আটকে থাকায় দুর্বিসহ জীবনযাপন করেন নদীপাড়ের মানুষজন। আবার এখন সেচ মৌসুমে নদীতে পানি না থাকায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে।


গাবরোল গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন  জানান, বুল্লাই নদী থেকে পানি দিয়ে আগে ফসল ফলাতাম। কিন্তু নদী ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়ায় সেই ব্যবস্থা এখন আর নেই। শিক্ষক আবুল কালাম জানান, নদীগুলোকে বাঁচাতে হলে নদীর সীমানা নির্ধারণ ও খনন করা জরুরি। 


উপজেলায় বুল্লাই, চারালকাটা যমুনেশ্বরী, ধামজাই, চিকলি, ইছামতীসহ অন্তত ১০টি নদী রয়েছে। আর পানিশূন্য এই নদীগুলোর বুকে এখন কৃষকেরা দখল করে ধানের চারা রোপণসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করছেন। ফলে নদীগুলোর নাব্যতা হারিয়ে পরিণত হয়েছে বালুচরে। আবার অনেকে নদীগুলোয় ঘের দিয়ে পানি আটকে মাছ চাষ করছেন। গত কিছুদিন ধরে সরেজমিন ঘুরে প্রায় সব নদীর একই চিত্র দেখা গেছে। 


এতে একদিকে যেমন ফসলে সেচের অভাব দেখা দিয়েছে, অন্যদিকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে দেশীয় মাছ। 


কৈমারী ইউপি চেয়ারম্যান সাদেকুল সিদ্দিক সাদেক  বলেন, ভরাট হয়ে যাওয়া নদীসমূহ খনন করা হলে এ এলাকার  কৃষকরা অনেক উপকৃত হতো। 


উপজেলা নির্বাহী অফিসার মইনুল ইসলাম জানান, উপজেলার নদীসমূহ খননের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, আশা করছি খনন করা সম্ভব হবে। 


পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া বিভাগীয় প্রকৌশলী বলেন, সারা দেশের মতো এ জেলার নদীসমূহ একসঙ্গে খননের প্রকল্প দেওয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।