পুলিশি গ্রেফতার আতঙ্ক কাটেনি

পঞ্চগড়ে শ্রমজীবী মানুষ দিশেহারা ‘উদ্বিগ্ন’ ব্যবসায়ীরা


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, ১২ই মার্চ ২০২৩


পঞ্চগড়ে শ্রমজীবী মানুষ দিশেহারা ‘উদ্বিগ্ন’ ব্যবসায়ীরা
ফাইল ছবি

পঞ্চগড়ে গ্রেফতার আতঙ্ক কাটেনি। উত্তরের জনবহুল জেলা পঞ্চগড়। আহমদিয়া মুসলিম জামাতের (কাদিয়ানী) সালনা জলসাকে নিয়ে সহিংস ঘটনায় পঞ্চগড় জেলায় এখনো ভীতি কাটেনি। ঘটনার আটদিন পেরিয়ে গেলেও পরিস্থিতি আগের অবস্থানে আসেনি।


পঞ্চগড়ের সৃষ্ট সহিংসতায় উঠতি বয়সসহ নানা শ্রেনির মানুষ গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ব্যবস্থা বাণিজ্যে স্থবিরতা বিরাজ করছে। বেচাকেনা একদম কমে গেছে। গালামাল, সবজি, কাপড়, হার্ডওয়্যার, সিমেন্ট রড সহ সব ধরনের পণ্য বিক্রি কমে গেছে। 


সম্প্রতি পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা এক প্রেসব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘নিরাপরাধ কাউকে হয়রানি করা হচ্ছেনা। টিভি ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তি যাচাই-বাচাই করে জড়িতদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এতে সাধারণ নিরাপরাধ মানুষের কোন ভয় নাই। কিন্তু তারপরেও মানুষের সমাগম নেই। 


শনিবার পঞ্চগড় চৌরঙ্গী মোড়ে বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছিল অটো মমিনুর (৩২)। তাকে জিজ্ঞাসা করতেই বলেন, ‘ভাড়া নাই’ ঘটনার পর খুব কষ্টে আছি। আটদিন ধরে এ অবস্থা। কি করবো যেখানে সপ্তাহে কিস্তি ৪২০০ টাকা। এখন নিজের সংসার চলেনা। কিস্তি দিবো কেমন করে। যেখানে প্রতিদিন ৬০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা আয় হতো সেখানে এখন হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। 


কথা হয় অটো চালক ইউনুসের (৩৫) সাথে তার চোখে মুখে চিন্তার ছাপ। তারপরে ভয়ে ভয়ে বলেন, চলেনা খুব কষ্টে আছি। দেখেন না লোকজন নাই। 


একজন অটো চালক বলেন, ভাই শনিবারের গুজব টা না হলে এমনটা হতো না। কি করি আর চলা যায়না। এভাবে আর কদিন আমি ঢাকা চলে যাবো। একজন বলেন ভাই ভয় লাগে ছবি তুলছেন পুলিশ তো ছবি দেখে লোক ধরছে।


পঞ্চগড় শহরের কয়েকজন ফল ব্যবসায়ী জিজ্ঞেস করেন ‘ভাই এভাবে কদিন চলবে। বেচাকেনা নাই। এভাবে চললে তো আমরা শেষ। 


একজন চাকরিজীবি মোবাইল ফোনে জানান, তার এক পরিচিত মানুষ বাড়ি দিনাজপুরে মেডিসিন কোম্পানিতে চাকরি করেন পঞ্চগড়ে। গত রোববার তিনি পঞ্চগড় শহরে কাজে গেলে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সে তো পঞ্চগড়ের মানুষ নয়। সে রিপ্রেজেনটিভ। 


সহিংস ঘটনার পর আহমদিয়া জামাতের কজন জানান, ভাই ভয়ে এখন এলাকা ছেড়ে বোদা শহরে আছি। আপনারা আমাদের কথাগুলো লেখেন। আমাদের এলাকার পরিচিত ব্যক্তি জনৈক রহমান ও এ ঘটনায় জড়িত ।এদিকে ঘটনার আটদিন ধরে পুলিশ বিজিবি ও র‌্যাব এখনো নিরাত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। আহামদ নগরে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোড়দার রয়েছে।


এদিকে শনিবার পর্যন্ত ১৬ টি মামলায় ১৮১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার সিরাজুল হুদা।