জামালপুরের সেই ইউএনও উপমা ফারিসার বদলী


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, ৬ই এপ্রিল ২০২৩


জামালপুরের সেই ইউএনও উপমা ফারিসার বদলী
ইউএনও

জামালপুরের সরিষাবাড়ীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উপমা ফারিসাকে বদলী করা হয়েছে । তবে নতুন কোন ইউএনও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। 


বুধবার (৫ এপ্রিল) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পির স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বদলীর আদেশ দেয়া হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারিকৃত ঐ প্রজ্ঞাপনে তাকে খুলনা বিভাগে ন্যাস্ত করা হয়েছে। 


এদিকে সকল বিষয় তুলে ধরে গত ২২ মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বরাবর ইউএনও উপমা ফারিসার অপসারণের দাবীতে বিভিন্ন অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে দৈনিক জনবাণী পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার দৈনিক আলোচিত জামালপুর পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক  মাসুদুর রহমান অভিযোগ দায়ের করেন। 


তার অভিযোগে স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব,বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ্ব মির্জা আজম এমপি, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার ,জামালপুর জেলা প্রশাসক ,জামালপুর পুলিশ সুপার,এনএসআই এর উপ পরিচালক (ডিডি), জামালপুর প্রেস ক্লাব, জামালপুর জেলা প্রেস ক্লাব, সরিষাবাড়ী প্রেস ক্লাব,উপজেলা প্রেস ক্লাবকে অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে ।


উল্লেখ্য যে,সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উপমা ফারিসা ২০২১ সালের ২৯ আগস্ট সরিষাবাড়ীতে যোগদানের পর থেকে টিআর, জিআর,কাবিখা, এডিপি, এলজিএসপি,১% সহ উপজেলা পরিষদের সরকারি বরাদ্দে নানা অনিয়ম,ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রকাশ্যে ঘুষ-বাণিজ্য,ভুয়া বিল বাউচার, ১০% না দিলে বিল পাশ না করা,বেনামি একাউন্টের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা স্থানান্তর সহ বিভিন্ন কৌশলে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন। 


এ ছাড়াও ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল সরিষাবাড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে রহস্যজনকভাবে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। পুড়ে ছাই হয়ে যায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কক্ষের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র, চেয়ার-টেবিল, আলমারিসহ কক্ষটির সমস্ত কিছু। 


এ ছাড়াও সহকারী কমিশনার-ভূমির (এসিল্যান্ড) পদটি গতবছরের ১৬ আগস্ট শূন্য হওয়ার পর ইউএনও উপমা ফারিসা অতিরিক্ত এসিল্যান্ডের দায়িত্ব পান। তার দায়িত্বকালীন ১৮ ডিসেম্বর রাতে উপজেলা ভূমি অফিস ও পার্শ্ববর্তী কামরাবাদ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চুরি হয়। 


উপজেলা ভূমি অফিসের দুটি জানালার গ্রিল ও একটি আলমারির তালা এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কলাপসিবল গেট, একটি দরজা ও তিনটি আলমারির তালা ভেঙে গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র তছনছ ও চুরি করে নেয় চোরচক্র। 


এরপর ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভূমি অফিসে পুনরায় চোর প্রবেশের চেষ্টা চালায়। ঘটনাটি প্রথমে ধামাচাপা দেওয়া চেষ্টার পর ফাঁস হলেও রহস্যজনক কারণে এখনো ঘটনার ক্লু উদঘাটন হয়নি। 


শুধু তাই নয় তথ্য অধিকার আইনানুযায়ী নির্ধারিত ফরমে সাংবাদিকরা আবেদন করলেও বিভিন্ন প্রকল্প হরিলুটের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই কোনো তথ্য প্রদান করা হয় না। 


কেউ তথ্যের জন্য আবেদন করলে সে খবর পৌঁছে যায় প্রকল্প সংশিষ্ট রাজনৈতিক নেতার কানে, এতে হয়রানির শিকার হয়েছে স্থানীয় সাংবাদিকরা । সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে সরিষাবাড়ী নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে ঝাড়ু মিছিল করা হয়েছিল।


আরএক্স/