বিনামূল্যে আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে সরকার: রেলমন্ত্রী
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন, ২৯শে এপ্রিল ২০২৩
রেলপথ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. নূরুল ইসলাম সুজন এমপি বলেছেন, জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসটির প্রথম অনুষ্ঠানে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিগ্যাল এইড কল সেন্টার ‘জাতীয় হেল্পলাইন’-এর উদ্বোধন করেন। এ হেল্পলাইনে ১৬৪৩০ নম্বরে ফোন করে যেকোন ব্যক্তি জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার মাধ্যমে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী, শ্রমিক, সহিংসতার শিকার নারী-শিশু এবং পাচারের শিকার মানুষের জন্য আইনি সেবা নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার জাতীয় আইনগত সহায়তা আইন-২০০০ প্রণয়নের মধ্য দিয়ে সরকারি খরচায় আইনগত সহায়তা কার্যক্রম শুরু করে। পরে এই আইনের অধীনে বিভিন্ন বিধি প্রণীত হয়। বিধিতে কোন কোন ব্যক্তি আইনি সহায়তা পাবেন তা নির্ধারণ করা হয়।
তিনি শুক্রবার পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
রেলপথ মন্ত্রী বলেন, জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের মূল উদ্দেশ্য হল সরকারি আইনিসেবা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি দরিদ্র ও অসহায় জনগণের ন্যায়বিচারে সহজ প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।
মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় শেখ হাসিনার অবদান, বিনামূল্যে লিগ্যাল এইডে আইনী সেবা দান’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালনে কর্মসূচি শুরু হয় সকাল থেকেই।
রেলমন্ত্রী বলেন, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসকে এখন শুধু আইনি সহায়তা প্রদানের কেন্দ্র হিসেবেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি, মামলা জট কমানোর লক্ষ্যে এ অফিসকে ‘এডিআর কর্ণার’ বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পক্ষসমূহের সম্মতির ভিত্তিতে লিগ্যাল এইড অফিসে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। এতে মামলার জট কমানো সম্ভব।
তিনি বলেন, দরিদ্র মানুষের জন্য কার্যকর আইনিসেবা নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন। দরিদ্র বিচারপ্রার্থীদের আইনি সহায়তা কার্যক্রমের প্রচার ও প্রসারে সরকার দেশী-বিদেশী সব এনজিওর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে আগ্রহী। বিচারক, আইনজীবী, এনজিও, সুশীল সমাজ সবার অংশগ্রহণে বাংলাদেশে একটি কার্যকর ও শক্তিশালী আইনি সহায়তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।
জেলা আইনগত সহায়তা কমিটির চেয়ারম্যান ও জেলা ও দায়রা জজ শরীফ হোসেন হায়দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান, জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা, পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুন, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, পরস্পরের নির্বাহী পরিচালক ও কমিটির সদস্য আকতারুন নাহার সাকী বক্তব্য দেন।
সভায় স্বাগত বক্তব্যে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ সাবরিনা আলম বরাত বলেন, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত পঞ্চগড়ে মোট দুই হাজার ৬৩৬ টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ৩০৬ টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩৩০ টি। এসব মামলা পরিচালনার জন্য চলতি বছরে চার লাখ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। দেওয়ানি ও ফৌজদারী মামলা পরিচালনার জন্য ৪৪ জন প্যানেল আইনজীবী রয়েছে।
এর আগে অতিথিরা জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে রঙিন বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দিবসটির উদ্বোধন করেন। পরে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার সেখানে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে জেলা জজশিপের বিচারক, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেয়।