প্রশাসনের হস্তক্ষেপে প্রবেশপত্র পেয়ে পরীক্ষা দিল সুমাইয়া, খুশি এলাকার মানুষ
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪:০০ পূর্বাহ্ন, ২রা মে ২০২৩
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শিলাইকুঠি বালাবাড়ি দাখিল মাদরাসার ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার অবশেষে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরেছে। পরীক্ষার দিন সকালেই তার হাতে প্রবেশপত্র পৌঁছে দেয় উপজেলা প্রশাসন। পরে সে কালান্দিগঞ্জ ফাজিল মাদরাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেয়।
জানা যায়, তিন মাস আগে নির্ধারিত সময়ে ফরম পূরণের ২৫০০ টাকা মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সুমাইয়ার কাছ থেকে আদায় করে। এরপর পরীক্ষার জন্য দিন-রাত পড়াশোনা করে প্রস্ততি নেয় সুমাইয়া আক্তার। শনিবার (২৯ এপ্রিল) মাদরাসায় প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা। সেই প্রবেশপত্র আনতে যায় সুমাইয়া। প্রবেশপত্রের জন্য অন্যদের মতো মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে ৫০০ টাকাও দেন তিনি। প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে দেখেন যে তার নামে কোনো প্রবেশপত্রই আসেনি। পরে জানতে পারেন তার ফরম পূরণই করেনি মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। তার বদলে ভুল করে দুই বছর আগে বিয়ে হয়ে লেখাপড়া থেকে ছিটকে পড়া সুরাইয়া নামের এক ছাত্রীর ফরম পূরণ করে দিয়েছেন তারা। এরপর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ওই ছাত্রী। পরে বিষয়টি তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল হক ও জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম রাতভর মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
রাতেই বোর্ডের চেয়ারম্যান ওই ছাত্রীর পরীক্ষা দেওয়ার সব ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর গতকাল রবিবার (৩১ এপ্রিল) সকালেই বোর্ড থেকে উপজেলা প্রশাসনের কাছে প্রবেশপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রবেশপত্র পেয়ে দারুণ খুশিতে উচ্ছ্বসিত সুমাইয়া ও তার পরিবার।
সুমাইয়ার বড় বোন মোর্শেদা আক্তার বলেন, যখন আমার বোন শুনেছে যে তার ফরম পূরণই হয়নি তখন সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। আসলে সে এমন পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিল না। উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় আমার বোন প্রবেশপত্র পেয়েছে। আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। সেই সঙ্গে বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয়কেও ধন্যবাদ।
তেঁতুলিয়ার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল হক বলেন, ওই মাদরাসাছাত্রীর বিষয়টি শোনার পর আমি ও জেলা প্রশাসক মহোদয় বারবার বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। রাতেই তিনি আমাদের বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে সকালে বোর্ড থেকে ওই ছাত্রীর প্রবেশপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার আগেই আমরা ওই ছাত্রীর কাছে প্রবেশপত্র তুলে দিতে পেরেছি। আমরা চাই না কেউ এমন ভুলের কারণে লেখাপড়া থেকে ঝড়ে পড়ুক। এ ছাড়া এমন ভুলের যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সে জন্য ওই প্রতিষ্ঠানসহ সকলকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রশাসনের এমন ভূমিকায় খুশিও এলাকার মানুষও।