‘‘মরিচের দাম পেয়ে খুশি পঞ্চগড়ের কৃষক’’


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৪১ পূর্বাহ্ন, ১০ই মে ২০২৩


‘‘মরিচের দাম পেয়ে খুশি পঞ্চগড়ের কৃষক’’
মরিচ শুকাতে ব্যাস্ত সময় পার করছে কৃষক

মরিচের দাম পেয়ে কৃষকের মন চাঙ্গা। পঞ্চগড়ের বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে মরিচের চাষ হয়েছে। এখন চলছে মরিচ তোলার মৌসুম। বর্ষার আগ পর্যন্ত দফায় দফায় উঠবে ক্ষেতের মরিচ। তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক কৃষাণি। মরিচ তুলেই তারা আবার আমন চাষে ঝূঁকবেন। করবেন বীজতলা‘ এমনটা আশা তাদের।


জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৮ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছে। আগের বার ৮ হাজার ৩৩৪ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ হয়েছিল। এতে শুকনা  মরিচের মোট উৎপাদন ছিল ১৭ হাজার মেট্রিক টনের উপড়ে। শুরুতে ৮ হাজার পরে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিমন শুকনা মরিচ বিক্রি হয়েছে। এতে আয় দাঁড়ায় চার কোটি টাকা প্রায়।চলতি মৌসুমে আয়ের পরিমান দ্বিগুন হওয়ার সম্ভবনা  রয়েছে বলে ধারনা সংশ্লিষ্ট সকলের। 


চলতি মৌসুমে প্রতিমন শুকনা মরিচ ১৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এখন ১২ হাজার ৫০০ শত টাকায় স্থায়ী হয়ে আছে। তবে ধারনা হচ্ছে দাম বাড়তে পারে। কারন বাজারে কাঁচা মরিচ দর নেমে প্রতি কেজি ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হতো। শনিবার পঞ্চগড় বাজার গিয়ে দেখা যায় প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। কাঁচা মাল ব্যবসায়ি জানান, দাম বেড়ে এখন কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে ১০০ টাকা।


 পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়ন , গড়িনাবাড়ি এবং আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়ন , মির্জাপুর সহ জেলার নানা এলাকা ঘুরে দেখা গেলো মাঠ জুড়ে মরিচ আর মরিচ। কেউ ক্ষেতের মরিচ তুলতে ব্যস্ত ‘কেউবা মরিচ শুকাতে ব্যস্ত। ব্যস্ত কৃষকের পরিবার-পরিজন। কৃষকের অনেকেই জানান, মাঝখানে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মরিচের ফলন তুলনা মূলক কম। তারপরেও তিন থেকে চার দফায় ক্ষেত থেকে মরিচ তোলা যাবে। পাঁচ মন কাঁচা মরিচ শুকিয়ে এক মন শুকনা মরিচ উৎপন্ন হয় এমনটি জানান ‘ কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদেক। 


পঞ্চগড় সদর উপজেলার ফুটকীবাড়ি, নতুন হাট, আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর এলাকার স্কুল মাঠ, গাছবাড়ি ,ডাঙ্গীরহাট, শুকনো পুকুরের ধারে, রাস্তার পাশে নিজ বাড়ির আশপাশে চলছে পাকা মরিচ শুকানোর ধূম। সদর উপজেলার কাশিমপুর এলাকার কৃষক হাফিজার রহমান বলেন ‘ আমি দুই বিঘা জমিতে কাঁচা মরিচের চাষ করেছি। 


বিঘায় ১০ থেকে ১৫ মন শুকনা মরিচ পাওয়া যাবে।এবার তিনি প্রতিমন শুকনা মরিচ বিক্রি করেছেন ১২ হাজার ৫০০ টাকা। তার বিঘায় খরচ সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা। হাফিজার বলেন ‘ গতবার তিনি প্রতিমন শুকনা মরিচ বিক্রি করেছেন ১০হাজার টাকা। মরিচ তোলা শেষ হবে আষাঢ় মাস পর্যন্ত। ওই একই এলাকার কবীর হোসেন দেড় বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। আটোয়ারী উপজেলার গাছবাড়ি এলাকার কৃষক শাহআলম বলেন তিনি এবার শুকনা মরিচ প্রতিমন ১৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। দাম একটু কমেছে‘ তবে তিনি মরিচ শুকিয়ে রেখেছেন‘ তার মতে,আবহাওয়া ভালো থাকলে উৎপাদন আরো বাড়তো।


ওই এলাকার ডাঙ্গীর হাটের কৃষক শাহজাহান হোসেন তিনি চার বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। গাছবাড়ি এলাকার আবু সালেক ও শাহজাহান আলী দুজনেই এক বিঘা করে মরিচ চাষ করেছেন বলে জানান।পঞ্চগড় জেলার মরিচের ক্ষেত ঘুরে দেখা যায় মরিচ তুলেই অনেকেই প্রতিদিন আয় করে ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা। প্রতি কেজি মরিচ তুললে দেওয়া হয় ৬ টাকা থেকে ৭ টাকা। এমনটাই জানান  হাফিজার রহমান    


জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরে উপ পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দীন বলেন ‘ মরিচের যথেষ্ট আবাদ হয়েছে ‘দাম পাচ্ছে চাষীরা। পঞ্চগড়ের মরিচ তো কাঁচা মরিচ হিসেবে বিক্রি হয়না। কৃষকরা মরিচ শুকিয়ে সংরক্ষণ করে পরে বিক্রি করে ‘ এতে তারা দামও পায় এখন তো ভরা মৌসুম । বর্ষাকাল পর্যন্ত এই মরিচ তোলার কাজ চলবে।


আরএক্স/