পঞ্চগড়ে যুব উন্নয়নের ঋণ পেল দুই যুবক


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৫:২৯ অপরাহ্ন, ১১ই মে ২০২৩


পঞ্চগড়ে যুব উন্নয়নের ঋণ পেল দুই যুবক
পঞ্চগড়ে যুব উন্নয়নের ঋন পেল দুই যুবক

‘তারুন্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি এই স্লোগানকে সামনে রেখে’ রংপুর বিভাগের আট জেলার কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে পঞ্চগড়ে ঋণ এবং আত্মকর্মসংস্থান কর্মসূচির মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  


বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর পঞ্চগড়ের হল রুমে এই কর্মশালার উদ্বোধন করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজহারুল ইসলাম খান। 


এ সময় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ) মো. আব্দুর রাজ্জাক, পরিচালক (দারিদ্র বিমোচন ও ঋন) এ কে এম মফিজুল ইসলাম, পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম শফিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 


কর্মশালায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার গাভী খামার নিয়ে প্রশিক্ষিত যুবক মোয়াকখিরুল অপু ও আব্দুর রহমানের হাতে প্রত্যেককে দুই লাখ টাকার চেক তুলে দেন মহাপরিচালক।


কর্মশালায় আট জেলার উপ পরিচালক এবং ৪৭ টি উপজেলার উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এবং রাজধানী থেকে আগত অডিটরসহ ঋণ বিতরণের সাথে যুক্ত ৮০ জন কর্মকর্তা কর্মচারী অংশ নেন। 


মূলত যুব উন্নয়নের মাধ্যমে রংপুর বিভাগের প্রশিক্ষিত যুবক ও যুব নারীদের ঋণ প্রদান, তাদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর, ঋণ আদায়ে সমস্যাগুলো চিহিৃত করা এবং সেই সাথে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে যুবক ও যুব নারীদের উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করতে এই কর্মশালার আয়োজন। 


দিনব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রেজেন্টেশন উপহার দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ইমপেক্ট প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। সেই সাথে এই প্রজেক্টসহ যুব উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কিভাবে যুবক ও যুব নারীদের সফলতার গল্প তুলে ধরেন রাজধানীর অডিটররা। 


কর্মশালায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক ( দারিদ্র বিমোচন ও ঋন) এ কে এম মফিজুল ইসলাম জানান, প্রতি বছর দেশে ২২ লাখ যুবক ও যুব নারীর কর্মসংস্থান হচ্ছে। এরমধ্যে ১০ লাখ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মে নিয়োগ হচ্ছে। তিন লাখ যুবক ও নারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। ১৫০ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা হয় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে। 


ঋণ পেয়ে হরহামেশাই স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারী পুরুষরা কেউ কেউ উদ্যোক্তা হয়ে চাকুরি দিচ্ছেন। কর্মশালায় ঋণ নিয়ে সমস্যা সমাধানের পথ এবং আগামী অর্থ বছরের জন্য কর্মপরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজহারুল ইসলাম খান জানান, ১৯৮১ এই অধিদপ্তরের জন্ম হয়। পরিসংখ্যান বলছে দেশে ৭০ লাখ যুবক ও যুব নারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এই অধিদপ্তরের মাধ্যমে। এর মধ্যে ২৪ লাখ নারী পুরুষকে সফল হয়েছে।  


এর মধ্যে ১৪ লাখ যুবক ও নারী নিজস্ব উদ্যোগে সফল হয়েছে এবং দশ লাখ নারী পুরুষ অধিদপ্তরের ঋণ নিয়ে সফল হয়েছে। আমরা চাই দেশের যুবক ও যুব নারীরা প্রথমে প্রশিক্ষণ পরে ঋণ নিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে সাবলম্বী হবে। আমি মনে করি প্রশিক্ষিত যুবক ও যুব নারীর ঋণ চাওয়াটা তাদের অধিকার। তিনি যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু ঋণ প্রদান করলেই দায়িত্ব শেষ নয় ঋণ আদায় সময়মত করা অপনাদের দায়িত্ব। 


কারণ ঋণ খেলাপি বেশি হলে অন্য উদ্যোক্তারা ঋণ পেতে সমস্যা হবে। রংপুর বিভাগের দশটি উপজেলায় ঋণ আদায়ের অবস্থান ভাল থাকলেও বেশ কিছু উপজেলায় খেলাপি বেশি। কোন কোন উপজেলা অত্যন্ত চমৎকার অবস্থানে রয়েছেন। 


তিনি বলেন, ফ্রি ল্যান্সিংয়ে বর্তমান বিশ্বে পৃথিবীর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। ভারত প্রথম অবস্থানে রয়েছে। অত্যন্ত জনপ্রিয় ফি-ল্যান্সিং প্রশিক্ষণ মাঠে রয়েছে। ফি ল্যান্সিং প্রকল্পটি নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দেন মহাপরিচালক। 


পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম সভাপতির বক্তব্যে বলেন, উত্তরের প্রান্তিক এই সম্ভাবনাময় জেলা পঞ্চগড়ের সকল দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে মাঠপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করা হচ্ছে। 


জেলা পর্যায়ে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে জেলার যুবক ও যুব নারীদের প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক সফলতা রয়েছে। আগামীতে এ জেলায় যাতে বেকারত্ব না বেড়ে যায় সেজন্য যুব উন্নয়নের ভূমিকা প্রশংসনীয়।


আরএক্স/