গুজব প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি কার্যকর


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:২৫ অপরাহ্ন, ১৫ই মে ২০২৩


গুজব প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি কার্যকর
ছবি: জনবাণী

রংপুরে ‘গুজব প্রতিরোধ ও উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। 


সোমবার (১৫ মে) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সভাকক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে এ সভার আয়োজন করে আঞ্চলিক তথ্য অফিস। 


সভায় বিভিন্ন বিভ্রান্তকর, সন্দেহজনক, অসত্য তথ্য যাচাই-বাছাই, অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণ করে প্রকৃত সত্য জনসম্মুখে তুলে ধরতে গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়।


মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন ও বিশেষ অতিথি জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন রংপুর আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান।


দেশের উন্নয়নে বস্তুনিষ্ঠ কার্যকর সংবাদ পরিবেশন জরুরি উল্লেখ করে গুজব প্রতিরোধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবহারে জনসচেতনতা বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সুস্পষ্ট ধারণা ও সচেতনতা বৃদ্ধির কথা বলেন বক্তারা।


জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন বলেন, গুজব প্রতিরোধে গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা সবচেয়ে বেশি কার্যকর। একারণে গণমাধ্যমগুলো আরো বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। গুজবের বিপরীতে প্রকৃত তথ্য উপস্থাপন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিতকরণ করতে হবে। জনসচেতনতা বাড়াতে বেশি বেশি লেখালেখি, প্রচার-প্রচারণা খুব বেশি প্রয়োজন। একই সাথে সূত্রহীন সংবাদ ও অসত্য তথ্য গণমাধ্যমে প্রচার করা থেকে বিরত থাকাটাও জরুরি। গুজব রোধে মিডিয়া লিটারেসি তৈরি ও মিডিয়ার (ট্রাডিশনাল) বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে হবে।  


জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী বলেন, তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে গুজব ছড়ানোর কলাকৌশলে পরিবর্তন এসেছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুজব ছড়ানো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে। ছবিতে কারসাজি, বানোয়াট ভিডিও, সত্যের বিকৃত উপস্থাপন, নকল ও কাল্পনিক বিশেষজ্ঞ, ভুয়া বক্তব্য, তথ্য বিকৃতি ও গণমাধ্যমের অপব্যবহার গুজবের কিছু কৌশল। এ পরিস্থিতিতে গুজব প্রতিরোধে গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।


সভাপতির বক্তব্যে আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, কোনো ঘটনা সম্পর্কে লোকমুখে প্রচারিত সত্যতা যাচাইবিহীন কিছু কথাই হলো গুজব। গুজবের উদ্দেশ্য হলো মিথ্যাকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত করা। এর ফলে সমাজে আতঙ্ক, অস্থিরতা ছড়ানো যায়। প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করা, বাজার অস্থিতিশীল করা, হিংসা ছড়ানো, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে বিভিন্ন কৌশলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এখন কেউ কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির পাশাপাশি ভিউ বাড়ানোর উদ্দেশ্যেও গুজব ছড়াচ্ছেন। এ কারণে গুজবের বিপরীতে প্রকৃত তথ্য উপস্থাপন এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি।


এছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন আঞ্চলিক তথ্য অফিসের সহকারী তথ্য কর্মকর্তা রুপাল মিয়া, প্রেস ক্লাব রংপুরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী, সিনিয়র সাংবাদিক মেরিনা লাভলী, সিটি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর মানিক, দৈনিক দাবানলের বার্তা সম্পাদক ও ঢাকা পোস্টের নিজস্ব প্রতিবেদক ফরহাদুজ্জামান ফারুক প্রমুখ।


সভায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন অপপ্রচার ও গুজব প্রতিরোধে সরকার কাজ করছে বলে জানানো হয়। বিটিআরটি, আইসিটি মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের ‌‌‘গুজব প্রতিরোধ ও অবহিতকরণ কমিটি’ রয়েছে। তথ্য অধিদফতরের ১১ সদস্য বিশিষ্ট ‘গুজব প্রতিরোধ ও সেল’ এবং পিআইডিতে ৪ সদস্যের একটি ফ্যাক্ট চেকিং কমিটি কাজ করছে। সরকারের পাশাপাশি গুজব প্রতিরোধে গণমাধ্যমগুলোকে আরো বেশি সতর্কতা অবলম্বন করার পাশাপাশি দায়িত্বশীল হবার আহ্বান জানিয়েছে আলোচকরা।