জলঢাকায় মোগল আমলের কাতার মসজিদটি সংরক্ষণের দাবি


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:১৭ অপরাহ্ন, ১৯শে মে ২০২৩


জলঢাকায় মোগল আমলের কাতার মসজিদটি সংরক্ষণের দাবি
ছবি: জনবাণী

প্রাচীন বাংলার স্থাপত্যকলার অনন্য এক নিদর্শন জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবারী ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরী গ্রামের তিন গম্বুজ ও ১২ মিনার বিশিষ্ট এক কাতার জামে মসজিদ। তবে বর্তমানে এ মসজিদটি সংরক্ষণ ও সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 


বিভাগীয় শহর রংপুর থেকে ৪৫ কিলোমিটার আর জেলা শহর নীলফামারী থেকে ২৬ কিলোমিটার আর উপজেলা শহর জলঢাকা উপজেলা থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দুরে ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরী গ্রামের বুড়ি তিস্তা নদীর তীর ঘেসা উন্মুক্ত স্থানে এমসজিদের  অবস্থান। দেয়ালের ওপরের দিকে ফুল ও লতার ছবি আঁকা। দেয়ালের ইটের গাঁথুনি অনেক শক্ত।


মূল মসজিদের দৈর্ঘ্য ১৫ হাত প্রস্থ ৩ হাত। কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মসজিদটির তিনটি গম্বুজ ১৫ ফুট ও ১২ টি মিনার ১৫ ফুট উঁচু। মসজিদটি প্রাচীন ও সৌন্দর্যমন্ডিত স্থাপনা হওয়ায় দূরদূরান্ত থেকে অনেক মানুষ এ মসজিদ দেখতে আসেন মানুষ।


শুক্রবার (১৯ মে) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, মোঘল আমলের ইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে তিন গম্বুজ ও ১২ মিনার বিশিষ্ট এক কাতার জামে মসজিদ। এ মসজিদ আকারে ছোট হলেও প্রাচীন কারুকার্যে তৈরি মসজিদটির নকশা ও গম্বুজগুলো বেশ দৃশ্যমান।


এ মসজিদটির বয়স প্রায় ৮ শত বছর। তবে সংরক্ষণের ও মেরামতের অভাবে মসজিদটির সবকিছু প্রায় বিনষ্ট হওয়ার পথে। দেয়ালের রঙ নষ্ট হয়ে ক্ষয় হওয়া ইট গুলো বের হওয়ায ও মসজিদটির কিছু স্থানসহ পিলার ভেঙে পড়ার উপক্রম হওয়ায এলাকাবাসী তা মেরামত ও সংস্ককার করেন ৫ ওয়াক্ত নামাজ পরার জন্য। 


মসজিদের বাহির দেয়ালে দরজার উপর পাশে কিছু আরবি লেখা আছে যা অস্পষ্ট। মসজিদটির ভিতরে নামাজ পরার জন্য এক কাতারসহ তিনটি দরজা রয়েছে সে দরজাগুলো একেবারে ছোট কোন রকমে ভিতরে ঢোকা যায়। মসজিদের উপরে ১২ টি মিনার ও ৩ টি গম্বুজ রয়েছে।


এলাকাবাসী জানান, মসজিদটি মোঘল আমলে নির্মিত হয়েছে। আবার অনেকেই বলেন বাপ-দাদার কাছ থেকে শুনেছি জমিদাররা এ মসজিদ নির্মাণ করেছেন। তবে সঠিক ইতিহাস জানে না কেউ।


মসজিদ কমিটির সভাপতি বলেন, মোগল আমলে এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে বাপ দাদার কাছে শুনেছি। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস মসজিদ যখন নির্মাণ করা হচ্ছিল তখন ঘন জঙ্গলে পূর্ণ ছিল এ এলাকা। মসজিদের শুরু থেকে নামকরণ করা হয় সিদ্ধেশ্বরী মসজিদ পাড়া জামে মসজিদ। যা পরে সিদ্ধেশ্বরী জামে মসজিদ নামে পরিচিতি পায়। 


এলাকাবাসী মো. আব্দুর রহমান বলেন, কত সালে এ মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় আমরা জানি না। সম্ভাব্য মোঘল আমলেই এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। 


সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে বর্তমানে এ মসজিদের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরে এবং ভেঙে পড়তে শুরু করলে এলাকাবাসী তার সবকিছু ঠিক রেখে সংস্কার ও মেরামত করে রং তা সামনের দিকে ইটের গাথুনি উঠিয়ে ও উপরে টিন দিয়ে নামাজের জন্য কাতার বৃদ্ধি করেছেন এ মসজিদে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পরেন এলাকার বাসিন্দারা। 


প্রাচীন স্থাপত্যকলার নিদর্শন হিসেবে যেভাবে সংস্কার ও মেরামত করার দরকার ছিল তা করা হয়নি। মসজিদটি সংরক্ষণ ও মেরামত না করায়  মসজিদের পুরানো সৌন্দর্যের অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে।


এলাকাবাসীর দাবি এই পুরোনো মসজিদ টি সংরক্ষণ, সংস্কার ও মেরামত করলে দর্শনীয় স্থান হবে। তখন এখানে বাহিরের লোক আসবে মসজিদ টি দেখতে। 


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ময়নুল ইসলাম বলেন, মসজিদটির খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। সংস্কার করা যায় কি না। 


জেবি/ আরএইচ/