বাসাবাড়িতে গ‍্যাস সংযোগ চালুর দাবিতে ময়মনসিংহে নাগরিক অবস্থান


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৪:৪৫ অপরাহ্ন, ২১শে মে ২০২৩


বাসাবাড়িতে গ‍্যাস সংযোগ চালুর দাবিতে ময়মনসিংহে নাগরিক অবস্থান
ছবি: জনবাণী

বাসাবাড়িতে তিতাসগ‍্যাস সংযোগ চালুসহ ২৫ দফা দাবিতে ময়মনসিংহে নাগরিক অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে জেলা নাগরিক আন্দোলন ও উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ এবং গ্রাহক-গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণ ঠিকাদার ঐক্য ফেডারেশন বাংলাদেশ জেলা কমিটিসহ অন‍্যান‍্য সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ। 


রবিবার (২১ মে) সকালে নগরীর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সামনে ঘন্টাব্যাপী এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। 


অবস্থান কর্মসূচিতে তাদের দাবিগুলো উত্থাপন করে বক্তারা বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদ সঠিকভাবে খনন নিশ্চিত করতে হবে। ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহর দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। যানজট মুক্ত নগরী গড়তে হবে। ঢাকা ময়মনসিংহ ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন স্থাপন করতে হবে। সকালে ও বিকেলে ঢাকা হতে ময়মনসিংহ ২ জোড়া আন্তঃনগর নতুন ট্রেন চালু করতে হবে। নগরীর বিষফোঁড়া ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তর করতে হবে। ময়মনসিংহ থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত আন্তঃনগর নতুন ট্রেন চালু করতে হবে। শেরপুর জেলাকে রেল যোগাযোগের আওতায় আনতে হবে। ময়মনসিংহ হতে সিলেট পর্যন্ত আন্তঃনগর নতুন ট্রেন চালুসহ পর্যায়ক্রমে সকল বিভাগীয় শহরের সাথে আন্তঃনগর ট্রেন চালু করতে হবে। ময়মনসিংহ রেল স্টেশনসহ শহরের মধ্য দিয়ে স্থাপিত রেল লাইনটি স্থানান্তর অথবা বিকল্প ব্যবস্থা করে যানজটমুক্ত শহর গড়ে তুলতে হবে। বিভাগীয় শহরসহ সকল জেলা শহরের অভ্যন্তরীণ সড়ক সমূহ প্রশস্ত করে বিভাগীয় শহরের সাথে জেলা শহরের মহাসড়ক সমূহ চার লেনে উন্নীত করতে হবে। নগরীর যানজট নিরসনে শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ থেকে বিজিপি ক্যাম্প পর্যন্ত নদের পাড়ে শহর রক্ষা বাঁধের পাশ দিয়ে নতুন রাস্তা নির্মাণ করতে হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করতে হবে। এস. কে হাসপাতালকে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি সংক্রমণব‍্যাধি হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করতে হবে। প্রস্তাবিত শিশু হাসপাতালের কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে। প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে, সে মতে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নীত করতে হবে। বিভাগীয় সদরে বিশেষ অর্থনৈতিক জোন স্থাপন করতে হবে। ৩০০০ শয‍্যার জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণ করতে হবে। ময়মনসিংহ বিভাগের স্থলবন্দর গুলোকে ইমিগ্রেশন সুবিধা দিয়ে পরিপূর্ণ স্থলবন্দরে উন্নীত করতে হবে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য শহরে একটি ব্যবসায়ী জোন অথবা নারী উদ্যোক্তা পল্লী গড়ে তুলতে হবে। বিভাগীয় শহরে একটি সংস্কৃতি পল্লী স্থাপন করতে হবে। ব্রহ্মপুত্র নদের উপর একাধিক সেতু নির্মাণ করতে হবে। অনতিবিলম্বে শম্ভুগঞ্জ ব্রিজের টোল আদার বন্ধ করতে হবে এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে রূপান্তরিত করা ও ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ক্রিকেটলীগ (বিপিএল)কে ময়মনসিংহ বিভাগকে যুক্ত করতে হবে। 


এ সময় অবস্থান কর্মসূচিতে গ্রাহক-গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণ ঠিকাদার ঐক্য ফেডারেশন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব মো. রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরে দীর্ঘদিন যাবত আবাসিক পর্যায়ে গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় ঠিকাদার ও ভবণ মালিকরা অসহায়ভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবনযাপন করছে। কাজেই যারা ডিমান্ড নোটের টাকা জমা দিয়েছে তাদেরকে দ্রুত গ‍্যাস সংযোগ দিতে হবে এবং বন্ধ আবাসিক তিতাস গ্যাসের সংযোগ পুনরায় চালু করতে হবে। 


এছাড়াও গ্যাস প্রত্যাশী গ্রাহকদের পক্ষে মো. জাহাঙ্গীর আকন্দ বলেন, দীর্ঘ ৮/১০ বছর পূর্বে হাজার হাজার গ্রাহক আবাসিক গ্যাস সংযোগের জন্য টাকা জমা দিয়েও আজ পর্যন্ত সংযোগ পায়নি। অনেকে গ্যাস সংযোগের আশায় ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে গ্যাসবিহীন বাড়ি ভাড়া দিতে না পারায় ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না, এতে করে দেশে ঋণ খেলাপি বাড়ছে। তাই বিষয়টি সরকারের বিশেষ বিবেচনা করা উচিত। 


অনুমোদিত গ্যাস ঠিকাদারদের পক্ষে মো. রমজান আলী খন্দকার বলেন, আমাদের সরকার জনগণের সরকার। যে সরকার দেশের প্রতিটি মানুষের সার্বিক কল্যাণের জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করছি। পাশাপাশি কাঙ্ক্ষিত প্রত্যাশা পূরণ করে বেকার হয়ে যাওয়া গ্যাস ঠিকাদারদের কর্মসংস্থান ফিরিয়ে দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহবান জানাই। 


এছাড়াও কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন- জেলা নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি এড. এ এইচ এম খালেকুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী নুরুল আমিন কালাম, এড. শিবির আহমেদ লিটন, এড. এমদাদুল হক মিল্লাত, সদস্য অধ্যক্ষ আবদুল বারী, সুলতান আহমদ, হালিমা খাতুন, নাছিমা খাতুন, মানবাধিকার সংস্থা মহানগর কমিটির সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভুঁইয়া, নাগরিক আন্দোলনের কোষাধ্যক্ষ রাজ্জাক, নাগরিক আন্দোলনের নেত্রী রোকেয়া সেলিনা, মানবাধিকার সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারা খাতুনসহ প্রমুখ। এ সময় নাগরিক অবস্থান কর্মসূচিতে প্রায় পাঁচ শতাধিক সচেতন নাগরিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করে।


জেবি/ আরএইচ/