ত্রিশাল সরকারী নজরুল কলেজ

লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ছাত্রাবাস এখন মাদকসেবীদের আখড়া


Janobani

উপজেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩:০৮ অপরাহ্ন, ২৫শে অক্টোবর ২০২৩


লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ছাত্রাবাস এখন মাদকসেবীদের আখড়া
ছাত্রাবাসের পাঁকা ভবনটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়।

লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ত্রিশাল সরকারী নজরুল কলেজের ছাত্রাবাসের পাঁকা ভবনটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। এটি এখন মাদকসেবীদের আখড়া নামে পরিচিত।


জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামে উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে অবস্থিত স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারী নজরুল কলেজ। পুরোনো একমাত্র টিনশেড ছাত্রাবাসটি ভেঙ্গে ২০১৫ সালে ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মান করা হয় পাঁকা ভবন। ভবন পাঁকা হলেও এটি আলোর মুখ দেখিনি। পড়ে আছে পরিত্যক্ত, অযত্নে অবহেলায়।


সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মানের পর থেকে পাঁকা ভবনটি পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। ভবনের পুরো কাজ শেষ না হওয়ায় ২০১৫ সালের পর থেকেই তালাবদ্ধ অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। ভবনের গেইট ও তালায় ধরেছে জং। ভবনের দেওয়াল ও ছাদে ঝোপঝাড় তৈরি হয়ে ভুতুড়ে পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। ভবনের চারপাশে ঝোপঝাড় তৈরি হয়ে মাদকসেবী ও কারবারিদের বিচরণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ভবনের পাশে পড়ে আছে নেশা করার দ্রব্য সামগ্রী। মাদকসেবী ও কারবারিদের নিরাপদ বিচরণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে এ ছাত্রাবাসটি।


স্থানীয়দের অভিযোগ, ছাত্রাবাসটি নদীর পাড়ে কলেজের এরিয়ার পিছনে হওয়ায় ও কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার ফলে এখানে মাদকসেবীদের যাতায়াত নিয়মিত। এখানে দিনের বেলায় অন্ধকার ভুতুরে অবস্থা থাকে আর রাতে এর অবস্থা ভয়াবহ হয়। এখানে নেশা ও জুয়ার আড্ডা জমে প্রতিনিয়ত। আমাদের চলাচল করতে ভয় করে। ছাত্রাবাসটি চালু হলে পরিবেশটাও ভাল হয়, নেশার আড্ডাও কমে যায়। তাই পুনরায় ছাত্রবাসটি চালু করার দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।


খোঁজ নিয়ে জানাযায়, শিক্ষার্থীদের আবাসনের সংকটের জন্য অনেক আগে টিনশেড একটি ছাত্রাবাস ছিল এখানে। চালু থাকা অবস্থায় ওই ছাত্রাবাসে থেকে লেখাপড়া করেছেন অনেক শিক্ষার্থী। ২০১৫ সালে পাকা ভবন নির্মানের ফলে বন্ধ হয়ে যায় ছাত্রাবাসটি। পাঁকা ভবন নির্মান হলেও কাজ শেষ না হওয়ায় সেই থেকেই ছাত্রাবাসটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষও এর কোনো রকম সংস্কার বা রক্ষণাবেক্ষণ করছেনা। ছাত্রাবাসটি কলেজের আবাসিক সংকটের জন্য খুবই প্রয়োজন হয়ে উঠেছে। কারন প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন এ কলেজে।


এ কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বলেন, কলেজ জীবনের দুটি বছর কেটেছে ওই ছাত্রাবাসে আমাদের। এখানে আমাদের অনেক বন্ধু ও ছোট ভায়েরাও ছিল। হঠাৎ নতুন ভবন হওয়ায় এ ছাত্রাবাসটি বন্ধ হয়ে যায়। গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী আবাসিক সংকটের কারণে শহরে থেকে পড়ালেখা করতে পারে না, অন্তত তাদের জন্য হলেও ছাত্রাবাসটি পুনরায় চালু করা উচিত।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারী নজরুল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নব রেখা বলেন, ছাত্রাবাসটি আমার কলেজের জন্য খুবই প্রয়োজন। এটি চালু করা গেলে আমার ছাত্ররা উপকৃত হবে। এটি আগে চালু ছিল ২০১৫ সালে পাঁকা ভবন নির্মানকাজ সম্পূর্ন শেষ না হওয়ার ফলে ছাত্রাবাসটি বন্ধ হয়ে যায়। ছাত্রাবাস ভবনটি কলেজ এরিয়ার পিছনে। এতে কোন নিরাপত্তা বেষ্টনি না থাকায় বহিরাগত অনেকেই বসে আড্ডাদেয়। তবে ওই ছাত্রাবাসটি পুনরায় চালু করার বিষয়ে পরিকল্পনা রয়েছে।


আরএক্স/