সংখ্যালঘুর জমির ওপর জোরপূর্বক রাস্তা, হামলা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৫ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


সংখ্যালঘুর জমির ওপর জোরপূর্বক রাস্তা, হামলা

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে এক সংখ্যালঘু পরিবারের জমির ওপর দিয়ে জোরপুর্বক রাস্তা নির্মাণ করেছে একটি প্রভাবশালী চক্র। এতে বাঁধা দেয়ায় হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুরের অভিযোগ করেন সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরা। থানায় লিখিত অভিযোগের পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। 

ওসি জানান, দুই পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে। সামাজিকভাবে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। 

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, নবীগঞ্জ উপজেলার তাড়ালিয়া গ্রামের সুধীর গোপ ও তার ভাইয়েদের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া একটি ধানিজমি দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছেন। সম্প্রতি এই জমিটির ওপর নজর পরে এলাকার প্রভাবশালী জহুর আলী ও শওকত আলীর। তারা নিজেদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার অন্য একটি রাস্তা থাকার পরও সুধীর গোপের জমির ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের পায়তারা করে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে জহুর আলী, তার ছেলে হোসাইন আহমেদ লালন, শওকত আলীর দুই ছেলে রফিক আলী ও শফিক আলীসহ তাদের লোকজন সুধীর গোপের জমি থেকে মাটি কেটে জমির মাঝখান দিয়ে একটি রাস্তা নির্মাণ করেন। এ সময় সুধীর ও তার ছেলে এবং ভাই ভাতিজারা বাঁধা দিলে দখলকারীরা তাদেরকে মারপিট করে। এক পর্যায়ে তারা সুধীর গোপের বাড়িতে হামলা চালায়। খবর পেয়ে রাত ৩টার দিকে গোপলা বাজার তদন্ত কেন্দ্রের একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে। কিন্তু শুক্রবার আবারও তারা ওই জমিটি দখলে নামে। এ ব্যাপারে শুক্রবার বিকেলে সুধীর গোপের ছেলে শুভ্র গোপ জহুর আলী ও শওকত আলী গংদের ২৩ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দেন। শনিবার সকালে আবারও উত্তেজনা দেখা দিলে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শন্ত করে এবং বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের উদ্যোগ নেন। 

এ ব্যাপারে সুধীর গোপ বলেন, ‘আমরা নিরিহ সংখ্যালঘু হওয়ায় জহুর আলী, শওকত আলী ও তার ছেলেরা প্রায় সময়ই আমাদের ওপর নির্যাতন করে। এখন তারা আমাদের জমিটি দখল করে জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণ করে নিয়েছে। এমনকি বাঁধা দেয়ার কারণে তারা আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়েছে। 

সুধীর পোগের ছেলে শুভ্র গোপ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে শতাধিক লোকজন আমাদের জমির ওপর দিয়ে রাস্তা বানিয়ে ফেলেছে। এমনকি আমাদের বাড়িতে এতে হামলা ও ভাংচুর করেছে। তারা আমাদের পরিবারের নারী-পুরুষকে মারপিটও করেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘এটা কোন নতুন ঘটনা নয়। প্রায় সময়ই তারা বিভিন্ন বিষয়টি নিয়ে আমাদের মারপিট করে এবং আমাদেরকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেয়।’ 

ইউপি সদস্য ইকবাল আহমেদ ছালিক বলেন, ‘জহুর আলী ও শওকত আলীর ছেলেরা এমনিতেই খারাপ লোক। তারা প্রায় সময়ই সুধীর গোপের পরিবারের ওপর হামলা করে। কারণে অকারণে তারা এই পরিবারের লোকদের মারপিট করে। বৃহস্পতিবারও তারা জানিয়েছে তাদের বাড়িঘরে হামলা করেছে। ওসিসাবসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ওসি সাহেব বলেছে সামাজিকভাবে এটা সমাধান করা হবে।’ 

এ ব্যপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জহুর আলী ও শওকত আলীর পক্ষের কেউ কথা বলতে রাজি হননি। 

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ডালিম আহমেদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার যখন তারা রাস্তা নির্মাণ করে তখন খবর পাওয়ার পরই রাত ৩টার সময় আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। শনিবার আবার আমি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। দুই পক্ষকেই শান্ত থাকতে বলেছি এবং বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি।’

এসএ/