কুড়িগ্রামে আবারও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:৩১ অপরাহ্ন, ১২ই জুলাই ২০২৪
আবারও বাড়তে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি। ফলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। টানা আট দিন ধরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি। বুধবার (১০ জুলাই) থেকে পানি আবারও বাড়ছে। এতে দুর্ভোগ বাড়ছে বানভাসিদের। তীব্র হচ্ছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। গোচারণভূমি তলিয়ে থাকায় গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে জেলার ৩৪১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে প্রায় সপ্তাহ ধরে। বেশ কয়েকটি গ্রামীণ সড়ক বন্যায় তলিয়ে গেছে।
শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুরে জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার দুধকুমারের অববাহিকায় বামনডাঙা ইউনিয়নের ফলিমারী এলাকায় গিয়ে দেখা যায় মানুষজনের দুর্ভোগ।
আরও পড়ুন: সীমান্তে হত্যা কোন মিমাংসা নয়: বিজিবি মহাপরিচালক
চরটির বাসিন্দা নূর ইসলাম জানান, তার ৩৩টি গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তিনি বলেন, ১৫ দিন থাকি চরতে পানি আইছে। গরু চরার উপায় নাই। না খেয়ে খেয়ে গরু রোগা হয়ে যাচ্ছে। নিজেদের ভাত রান্নার উপায় নাই। বেউপায় হয়ে আছি। আনছারহাট এলাকার ঝড়ু মিয়া বলেন, বাড়ি থেকে বের হওয়ার পারি না। নিজের চেয়ে অন্যের দুঃখ দেখলে কান্না আসে।
পাশে সরকারি ত্রাণ বিতরণ করেছেন বামনডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রনি। তিনি বলেন, বামনডাঙা ইউনিয়নের ৭টি ওয়ার্ড পানিবন্দি। কয়েক হাজার মানুষ পানিতে আটকে আছে। আমরা যা বরাদ্দ পাচ্ছি, তখনই বিতরণ করছি। শুক্রবার ও তিন টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। বাপাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) মৌসুমি বন্যা ও বৃষ্টিপাতের পরিস্থিতির বার্তায় জানায়,ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে। আগামী তিন দিন সেটা অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে এখনও ২ লাখ মানুষ পানিবন্দী
আবহাওয়া সংস্থাসমূহের বরাত দিয়ে কেন্দ্রটি জানায়,দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তার পাশাপাশি উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম জেলার ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। সময় বিশেষে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদীর পানির সমতল বাড়তে পারে। ধরলা ও দুধকুমার নদীসংলগ্ন কুড়িগ্রাম জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সামান্য অবনতি হতে পারে। এদিকে দুধকুমারের পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার, ধরলার কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্রের নুনখাওয়ায় ৩৪ সেন্টিমিটার, হাতিয়ায় ৩২ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া কুড়িগ্রামে ১৩১ মিলিমিটার,চিলমারীতে ৫৮ মিলিমিটার ও পাটেশ্বরীতে ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ৫৫০ টন চাল ও ৩৩ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এখনো ত্রাণ মজুত রয়েছে।
এমএল/