কক্সবাজারে আরও একটি মামলা: গ্রেফতার আরও ১১


Janobani

জেলা প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৭:৪৪ অপরাহ্ন, ২৪শে জুলাই ২০২৪


কক্সবাজারে আরও  একটি মামলা: গ্রেফতার আরও ১১
প্রতীকি ছবি

কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার শহরে সংঘটিত হামলা, ভাংচুর ও ছাত্রলীগের ৪ নেতাদের মারধরের ঘটনায় আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।


মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুরের সময় আহত কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক রাজীবুল ইসলাম মোস্তাক বাদি হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় এই মামলাটি দায়ের করেন বলে নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম।


তিনি জানান, ছাত্রলীগ নেতা বাদি হয়েছে দায়ের করা মামলাটিতে ১০৩ জনের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত বলা হয়েছে আরও অনেকেই।


এ নিয়ে কক্সবাজারে মোট পাঁচটি মামলা দায়ের করা হল। এই ৫ মামলায় বুধবার সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত আরও ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান ।


তিনি জানিয়েছেন, কক্সবাজারে সংঘটিত ঘটনায় ৫ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনায় আরও ১১ জন সহ এ পর্যন্ত ৩৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলায় জড়িতদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে। ভিডিও, ছবি দেখে যাদের শনাক্ত হচ্ছে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।


কোটা আন্দোলনের শুরুতে কক্সবাজারের সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু ১৬ জুলাই বেলা ১১ টায় মিছিল করে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম সড়কের লিংক রোড এলাকায় অবস্থান নেয় কক্সবাজার পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী ও শিবির নেতারা। পুলিশ ওই সময় সড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দিলেও এরা মিছিল সহকারে কক্সবাজার সরকারি কলেজে গেইটে যান। ওখানে আগে থেকে অবস্থান নেয়া ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওখানে গাড়ি ভাংচুরও করা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর আন্দোলনকারিরা আবারও অবস্থান নেন লিংক রোড এলাকায়। আবারও পুলিশ তাদের সরিয়ে দেন। কিন্তু আন্দোলনকারি ওখান থেকে বিকাল ৪ টায় মিছিল সহকারে কক্সবাজার শহরে আসে। তারা শহরের লাল দিঘীর পাড় এলাকায় গিয়ে যেখানে অবস্থিত জেলা আওয়ামীলীগ, জাসদ ও জাতীয় পার্টির কার্যালয় ভাংচুর করে। কুপিয়ে ও মারধরে আহত করা হয় ছাত্রলীগের ৪ নেতাকে। একই সময় পাশের একটি মসজিদেও ভাংচুর করে তারা।

 


ওই ঘটনার পর বুধবার উভয় পক্ষ মিছিল ও সভা করে কর্মসূচি শেষ করে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর চালানো হয় তাণ্ডব। সন্ধ্যার পর আন্দোলনকারিরা মিছিল সহকারে বাস টার্মিনাল হয়ে গাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর, বোমা বিস্ফোরণ করতে করতে আসতে থাকে শহরের দিকে। এই খবরে লালদিঘীর পাড় এলাকায় জড়ো হন আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী। মিছিলটি ওই এলাকায় পৌঁছার সাথে সাথেই উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। একের পর এক গুলি বর্ষণ, হাত বোমার বিস্ফোরণে সংঘর্ষ চলতে থাকে। রাত ৯ টার দিকে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনেন। ওই সময় লালদিঘীর পাড় এলাকায় অবস্থান নেন আওয়ামীলীগ। আন্দোলনকারিরা অবস্থান নেন ফজল মার্কেট এলাকায়। এক পযায়ে পুলিশ-বিজিবি, র‌্যাবের সাথেও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয় আন্দোলনকারিদের। ওই দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সময় লাগে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত। ওই দিনের ঘটনায় একজনের মৃত্যু ও আহত হন আরও ৩৭ জন।


শুক্রবার সন্ধ্যার পর আবার শহরের প্রধান সড়কের বার্মিজ মাকের্ট, টেকপাড়া, তারাবানিয়ার ছড়া, রুমালিয়ারছড়া, আলীজাহান এলাকায় অবস্থান নেন এরা। মধ্যরাত পর্যন্ত গাড়ি ভাংচুর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়।


জেবি/এসবি