শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী শিখন ঘাটতি
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:২১ পিএম, ১লা আগস্ট ২০২৫

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পরিচালিত বেজলাইন মূল্যায়নে প্রকাশ পেয়েছে এক বাস্তব চিত্র—২৫ থেকে ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী বাংলা, ইংরেজি ও গণিতে শিখন ঘাটতিতে ভুগছে।
জুলাই মাসের গোড়ায় দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শিখন অবস্থা যাচাইয়ে এই কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদানে দুর্বলতা চিহ্নিত করতে পরিচালিত এই মূল্যায়নে উঠে এসেছে, অনেক শিক্ষার্থী পড়তে, লিখতে বা উচ্চারণে সমস্যায় ভুগছে।
শ্রীমঙ্গলের একটি বিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, শিশুরা খাতা-কলম হাতে বসে আছে। কেউ আত্মবিশ্বাসী, কেউ মুখে উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষায়। শিক্ষকরা একে একে শিক্ষার্থীদের পড়তে বলছেন, প্রশ্ন করছেন ইংরেজি ও গণিতে। শিক্ষার্থী সাইমা আক্তার জানায়, “স্যার আগে লিখিত পরীক্ষা নিলেন, পরে মুখে প্রশ্ন করলেন। যেগুলো পারিনি, বাসায় গিয়ে শিখছি। আবার পরীক্ষা হবে তো!”
শিক্ষক ঝুমি রানী সরকার বলেন, “লিখিত মূল্যায়নের মাধ্যমে এখন শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে। এতে শিক্ষাদান আরও পরিকল্পিতভাবে করা যাবে।”
কমলগঞ্জের এক প্রধান শিক্ষক লাভলী রানী দে বলেন, “প্রায় ৩০ ভাগ শিক্ষার্থী সঠিকভাবে পড়তে বা লিখতে পারে না। তাদের তথ্য রেকর্ড করে উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা নিচ্ছি। এটি একটি গ্রাফের মতো—কাকে কোথায় সহায়তা লাগবে, তা এখন স্পষ্ট।”
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, “মূল্যায়নে দেখা গেছে, ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী মোটামুটি পড়তে-লিখতে পারছে। বাকিদের স্তরে স্তরে ঘাটতি রয়েছে।”
মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বলেন, “প্রতিদিনই কোনো না কোনো বিদ্যালয় পরিদর্শন করছি। অনেক শিক্ষার্থীকে নিজে যাচাই করেছি। এই মূল্যায়ন একটি মাইলফলক কর্মপরিকল্পনার অংশ।”
তিনি আরও জানান, আগামী চার মাস এই শিশুদের জন্য হবে একটি রূপান্তরকাল। বিদ্যালয়, শিক্ষক ও অভিভাবক যদি একযোগে কাজ করেন, তাহলে পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীরাও শিখে উঠতে পারবে, সামনে এগিয়ে যাবে।
আরএক্স/