থমকে আছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের উন্নয়ন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


থমকে আছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের উন্নয়ন

"রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড" আভ্যন্তরীণ কোন্দল ও হিংসাত্মক মনোভাবে থমকে আছে উন্নয়ন কাজ। কাজের কাজ না হলেও শুধুমাত্র হিংসা ও সুবিধাভোগের লোভে একে অপরকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও কাদাছোড়ায় ব্যস্ত থাকছেন বোর্ড চেয়ারম্যান ও তার দোষররা। সম্প্রতি বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা যায়, বোর্ড চেয়ারম্যান  ঈদ-উল-ফিতর ২০২২ এ অপরাধ চিহ্নিত বা প্রমাণ না করে, বরখাস্ত কিংবা সাময়িক বরখাস্ত না করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাফর ইকবালের বেতন ভাতা অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে বন্ধ রেখেছেন। চেয়ারম্যানের নামে একটি গাড়ি বরাদ্দ থাকলেও তিনি দুটি গাড়ি ব্যবহার করছেন। একটিতে তিনি নিজে ও অন্যটি তার পরিবার পরিজন ব্যবহার করছেন। চেয়ারম্যানের অসহযোগিতা ও অদক্ষতার কারণে উন্নয়নমূলক কাজ মসজিদ সংষ্কার ও লিফট, জেনারেটর স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ আছে, বোর্ডের কর্মকর্তাদের চাহিদা সংক্রান্ত নথিপত্র আটকে রেখে চাহিদা পুরন না করে কর্মচারীদের মাঝে অসন্তোষ তৈরি করেন তিনি। প্রেষণ ও বোর্ডের নিজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা চেয়ারম্যানের নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। যা বোর্ড কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে প্রমাণিত। উল্লেখযোগ্য অভিযোগগুলোর মধ্যে বিদ্যালয় ও কলেজ শাখাসহ গুরুত্বপূর্ণ শাখা সমূহের নথি স্বাক্ষর না করে দীর্ঘ দিন ফেলে রাখা। তার কক্ষে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা গেলে রাজা বাদশার ন্যায় আচরণ করে বসতে না বলে দাঁড় করিয়ে রাখা। 

ইতোমধ্যে বোর্ডের সচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তাঁর দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন। বোর্ডে আগত সেবাগ্রহিতাবৃন্দকেও ছাড় দেন না তিনি। মূলত তিনি সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগার কারণে কখন কি করবেন তা বুঝে উঠতে না পেরে মূলত উদ্ভট কাজ কর্ম করেন। গত শীতে অকারণে কর্মকর্তাদের কক্ষে আটকিয়ে রেখে তিনি নিজ কক্ষে মোবাইলে ইউটিউবে ভিডিও দেখেন। গত রমজান মাসে ইফতার পার্টির কমিটি গঠন ও দিনক্ষণ ঠিক করে পরে একক সিদ্ধান্তে তা বাতিল করেন। সেই ইফতার আয়োজনে আর্থিকভাবে ক্ষতি হয় বোর্ডের। 

এদিকে  অভিযোগ উঠেছে, সিলেকশন-১ কমিটির ফাইল তিনি নিজে তার আলমারি রেখে খোঁজাখুঁজি নামে হয়রানি হুমকি ধামকি সহ দেখে নেওয়া কথা বলেছেন। এ বিষয়ে বর্তমানে নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা খোরশেদ আলমকে হুমকি ধামকিসহ চাকুরী খেয়ে ফেলার হুমকি দেন তিনি। পরে অবশ্য সেই ফাইল সচিবের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের কক্ষের আলমারি থেকে গত ২২ মে উদ্ধার হয়। 

প্রসঙ্গত, বোর্ড চেয়ারম্যান কোন গণমাধ্যমকর্মী সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন না। তথ্য চাইলে তথ্য দেন না। তাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন। 

উল্লেখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বোর্ডে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জানান, তিনি (বোর্ড চেয়ারম্যান) নিজে বেলা ১২টায় অফিসে আসেন, অথচ কারণে অকারণে যাচাই বাছাই ছাড়াই কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিস টাইম নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করছেন।
 
এ বিষয়ে জানতে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানেকে মুঠোফোনে ফোন দিলে তিনি বলেন, কোন প্রকার উন্নয়ন কাজ থেমে নেই। মসজিদে এসি লাগানো হয়েছে। অফিসে যারা ঠিক সময়ে আসে না তাদেরকে পরিদর্শনে সময় না পেয়ে সর্তক করেছি। আমি কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করি না। যারা অভিযোগ দিয়েছে তারা মিথ্যা কথা বলেছে । কারো নথিতে ভুল থাকলে তা আমি ছেড়ে দিতে পারি না। জাফর ইকবালের বেতন ভাতার বিষয়ে সচিবের সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি।

এসএ/