কয়লা সংকটে অর্ধৈকে নেমেছে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


কয়লা সংকটে অর্ধৈকে নেমেছে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন

কয়লার মজুত শেষ হয়ে আসায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা সম্পন্ন কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। কয়লা সংকটে উৎপাদন অর্ধৈকে নামিয়ে আনা হয়েছে।

পুরো উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে গেলে মজুত কয়লা আগামী ১৫ থেকে ১৮ দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। আগামী আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় কয়লা সরবরাহ করতে না পারলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির বিদ্যুৎ উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে করে পুরো উত্তরাঞ্চল অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে পারে।

বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে সূত্রে জানা যায়, কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্বাভাবিক উৎপাদনের জন্য পাঁচ হাজার ২০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কোল ইয়ার্ডে কয়লা মজুত রয়েছে মাত্র ৮০ থেকে ৯০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা। এজন্য ৫২৫ মেগাওয়াট থেকে বিদ্যুতের উৎপাদন কমিয়ে আনা হয়েছে মাত্র ২০০ মেগাওয়াটে। এতে প্রতিদিন কয়লা লাগছে দুই হাজার মেট্রিক টন। দেশে লোডশেডিং বেড়ে যাওয়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে উৎপাদন কিছুটা বাড়িয়ে ২৭৫ মেগাওয়াট করা হয়েছে। এতে প্রতিদিন কয়লা লাগছে আড়াই হাজার মেট্রিক টন থেকে তিন হাজার মেট্রিক টন। এভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারবেন অন্তত ৪০ দিন। তবে পুরো উপাদন স্বাভাবিক রাখতে গেলে কোল ইয়ার্ডে মজুত কয়লা ১৫ থেকে ১৮ দিন চলতে পারবে। 

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি সূত্রে জানা যায়, খনির ১৩১০ নং কোল ফেইসের (কূপ) কয়লা শেষ হওয়া ১ মে থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। নতুন করে ভূগর্ভ থেকে কয়লা উত্তোলনের জন্য নতুন ১৩০৬ নং কোল ফেইসের প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণসহ উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। কাজ শেষ হলেই কয়লা উত্তোলন শুরু হবে।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌলশী মো. কামরুজ্জামান জনবাণীকে বলেন, “ভূগর্ভে পরিত্যক্ত ১৩১০ নং কোল ফেইস থেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নতুন ১৩০৬ নং কোল ফেইসে স্থানান্তরসহ কোল ফেইসের উন্নয়ন কাজের জন্য সাড়ে তিন সময় লেগে যায়। আগস্টের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে কোল ফেইসের কাজ শেষ করতে দিনরাতে কাজ চলছে। কাজ শেষ হলেই ১৩০৬ নং কোল ফেইস থেকে পুরোদমে কয়লা উত্তোলন শুরু হলে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় কয়লা সরবরাহ করা সম্ভব হবে।”

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী এসএম ওয়াজেদ আলী সরকার জনবাণীকে বলেন, “কয়লা সংকটের কারণে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে কঠিন সংকট আর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।  দ্রুত কয়লা সরবরাহ করা না গেলে পুরো উত্তরাঞ্চল বিদ্যুৎহীন কিংবা লো ভোল্টেজসহ ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের মধ্যে পড়তে পারে। মজুত কয়লা দ্রুতই শেষ হয়ে আসায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রেটি চালু রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”

এসএ/