পিঠার হাটে চলছে পিঠা খাওয়ার ধুম
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:১১ অপরাহ্ন, ১১ই জানুয়ারী ২০২৫

বাংলা ক্যালেন্ডারের পাতায় এখন পৌষ চলছে। তবে বিগত কয়েকদিনে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। যশোরের বেনাপোল ও শার্শা অঞ্চলে জেঁগে বসেছে শীত। নবান্ন শুরু হয়েছে আরও কিছুদিন আগে। গ্রামাঞ্চলের গোলাতে নতুন ধান। সেখানে শুরু হয়েছে চাউলের গুড়া তৈরি ও পিঠা পায়েশ খাওয়ার ধুম। সে হাওয়া বইছে ব্যস্ত নগর জীবনেও।
আরও পড়ুন: শার্শায় ২ মাথা নিয়ে শিশুর জন্ম
বেনাপোলসহ শার্শাবাসী পিঠা তৈরির ফুরসত না পেলেও পিঠার স্বাদ নিতে ভোলেন না। তাই শীতের শুরুতেই বেনাপোল চলছে পিঠা বানানো ও পিঠা খাওয়ার ধুম। নানা রকমের পিঠার স্বাদ নিতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ। রাস্তার ধারে গড়ে ওঠা ছোট ছোট পিঠার দোকানগুলোতে পিঠা বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।
পিঠা আর বাঙালি একসূত্রে গাঁথা। তাই সারা বছর রেস্টুরেন্টগুলোতে ফাস্ট ফুড, চাইনিজ, থাই, ইটালিয়ান, রাশিয়ানসহ বিদেশি খাবারের পেছনে ছুটলেও শীতের মৌসুমে পিঠার কথা ভোলেন না রসনা প্রিয় মানুষ। গেলো কিছুদিন ধরেই শীতের তীব্রতা বেড়েছে। তাই শীতের শুরতেই বেনাপোলসহ গোটা শার্শা উপজেলার বিভিন্ন বাজার, ব্যস্ত সড়কের পাশে, পাড়া মহল্লার দোকানে চলছে পিঠা বানানোর ধুম।
কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন পিঠা বানাতে। এসব দোকানে দুপুরের পর থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে পিঠা তৈরির আয়োজন। চাউলের গুড়া, গুড়, নারকেলসহ পিঠা তৈরির সরঞ্জাম নিয়ে দোকানে দোকানে কারিগররা ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। কাস্টমারদের কেউ কেউ দোকানে বসেই নিচ্ছেন পিঠার স্বাদ, আবার কেউবা পার্সেল নিচ্ছেন পরিবার পরিজনের জন্য।
শেষ বিকেল থেকে মাঝ রাত অবধি চলছে পিঠা বানানোর কাজ।পিঠা বানানোর এ আয়োজন দেখা যাচ্ছে বেনাপোল বাজারে বিভিন্ন সুপারশপেও। স্বপ্ন, ওরিয়েন্টেও বানানো হচ্ছে পিঠা। সেখানেও ভোজন রসিকরা আসছেন পিঠার স্বাদ নিতে।
পিঠা তৈরির আয়োজন শুরু হয়েছে অগ্রহায়ন মাস থেকেই। তা চলবে পুরো পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন ও চৈত্র মাস জুড়ে। ভাপা পিঠা, চিতই পিঠার পাশাপাশি কোন কোন দোকানে আবার পাটিসাপটারও দেখা মিলছে। চিতই পিঠা বা কাঁচি পোড়ার সাথে ধনিয়া পাতা, শুটকি, কাঁচামরিচ, রসুন পেঁয়াজের বাহারি মুখরোচক ভর্তা। অনেক পিঠার দোকানে আবার বিয়ে, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য পিঠার অর্ডারও নেয়া হয়।
সবুজ নামের এক কর্মজীবী বলেন, জীবিকার তাগিদে গ্রামের বাড়ি যাওয়া হয় না, তাই আগের মতো পিঠার স্বাদ মিস করি। তবে এখানে দাঁড়িয়ে খাওয়া পিঠায় গ্রামের মতো স্বাদ না পেলেও কিছুটা তৃপ্তি পাওয়া যায়।
শাহীনুর রহমান বলেন, রেল স্টেশনে অফিস হওয়াতে পিঠার দোকানের সামনে দিয়ে রোজ আসা যাওয়া করতে হয়, প্রায়ই এখানে পিঠা খেতে আসি। পিঠা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। আমরা যত ব্যস্তই থাকি না কেনো, শীত এলে পিঠার স্বাদ না নিলে চলে না।
আরও পড়ুন: লাইট জ্বালানোকে কেন্দ্র করে শার্শায় মুয়াজ্জিনকে কুপিয়ে জখম
উপজেলা নাভারন এলাকার আবু বকর বলেন, নিজে তো পিঠার দোকানে আসিই, পরিবারের সদস্যরাও আসে। পিঠা না খেলে শীতকাল জমে ওঠে না।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, রাস্তার পাশে খোলা বাজারে তৈরি করা পিঠাতে ধুলাবালুসহ নানা রকম জীবাণু লেগে যেতে পারে, যা থেকে হতে পারে পেপটি কালচার ডিজিজ। তাই পিঠা তৈরিতে এবং খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
এসডি/