অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের মাষ্টার প্রকৌশলী ইমরান
বশির হোসেন খান
প্রকাশ: ০১:৩০ অপরাহ্ন, ৬ই মে ২০২৫

# মিটার রিডারকে বাচাতে নির্বাহী প্রকৌশলীর তোড়জোড়
#মিটার খুলে নোটিশ করেছি
# ইমরান আলী নির্বাহী প্রকৌশলী, আদাবর
তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো
- আবু হেনা মোস্তফা কামাল, প্রধান প্রকৌশলী, ডিপিডিসি
দুর্নীতি, অনিয়ম আর ক্ষমতার অপব্যবহারের কত রূপ, তা দেখাচ্ছেন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) লিমিটেডের আদাবর ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আয়তুল্লাহ ইমরান আলী। তিিন মিটার রিডার ইলিয়াসের চাকরি বাচাতে তোড়জোড় শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ সূত্র বলছে, আদাবর ডিভিশনের ঢাকা উদ্যান ফিডারের নবীনগর হাউজিংয়ের ৬ নম্বর রোডের ১ নম্বর হোল্ডিংয়ে একটি উচ্চচাপ (এইচটি) সংযোগ রয়েছে। একই স্থাপনায় দুটি সংযোগ না দেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের বিধিনিষেধ থাকলে মিটার রিডার ইলিয়াস ভবনটির নিচে একটি দোকানে ভিন্ন হোল্ডিং নম্বরের একটি এলটিসিটি মিটার খুলে এনে সংযোগ প্রদান করে।
সরেজমিনে অনুসন্ধান করে অভিযোগের সত্যতা প্রমান গেছে। ভবনটিতে অবৈধভাবে দেয়া সংযোগটি ৫৩৩/১ মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ ঠিকানার মো. সামসুদ্দিনের নামে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যার মিটার নাম্বার ১৫৯৩২০৮৯, কাস্টমার নাম্বার ৩১৬৫৪৩৬৫। অনুসন্ধানকালে স্থানীয় কয়েকজন দোকান মালিক অভিযোগ করেন আদাবরের নির্বাহী প্রকৌশলী আয়াতুল্লাহ ইমরান আলীর ছত্রছায়ায় মিটার রিডার ইলিয়াস, বিল সুপারভাইজার নবীনগর হাউজিং, ঢাকা উদ্যান হাউজিং, চন্দ্রিমা মডেল টাউনে এমন বহু অবৈধ সংযোগ দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান আলী গত বুধবার বিকালে নিজস্ব লোকজন দিয়ে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে, মিটার খুলে নিয়ে আসে। নিয়ম অনুযায়ী এমন অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ক্ষেত্রে ডিপিডিসি’র টাস্কফোর্সের উপস্থিত থাকতে হয় এবং সংশ্লিষ্ট মিটার রিডারকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু ইমরান আলী টাস্কফোর্স, ডিপিডিসির প্রধান প্রকৌশলী (নর্থ), সংশ্লিষ্ট সার্কেল তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে অবগত না করে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেছেন। এব্যাপারে অভিযুক্ত মিটার রিডারকেও তলব করা বা বরখাস্ত করার কোনো উদ্যোয়াগ নেননি। বিভিন্ন অনিয়মের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান আলী বিভিন্ন মাধ্যমে সম্পদ গড়ার পাশাপাশি অসাধু উপায়ে কামাচ্ছেন কাড়িকাড়ি টাকা। ক্ষমতার দাপটে কাউকেই যেন গ্রাহ্য করেন না। টাকা ছাড়া কিছুই বোঝেন না এই দাপুটে কর্মকর্তা। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি অভিযোগ পত্র জমা পড়েছে। এ ছাড়াও তিনি দালাল চক্রের নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে মিলেছে সত্যতাও। টাকা দিলেই মেলে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ।
এ ব্যাপারে মিটার রিডার ইলিয়াস বলেন, আমি মিটার রিডার। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া আমার কাজ না। তাই কিভাবে নাম আসলো তা আমি জানি না। তবে এই ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই।
এব্যাপারে অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আয়াতুল্লাহ ইমরান আলী বলেন অভিযোগের ভিত্তিতে মিটার খুলেছি এবং নোটিশ প্রদান করেছি। অভিযোগ সত্য প্রমানিত হলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। লাইনম্যান কিংবা মিটার রিডারদের সঙ্গে এমন কোন সংশ্লিষ্টতা নাই। অনিয়মের সাথে যেই জড়িত থাকুক না কেন জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরন করা হবে।
অভিযোগের ব্যাপারে প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, ঘটনা সম্পর্কে এর আগে আমি জানি না। তবে ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।