চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে নওফেল দোসরদের আনাগোনা চলছে
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:১১ অপরাহ্ন, ১৭ই মে ২০২৫

শিক্ষা প্রশাসনের মত চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা সরকারের শিক্ষা মন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেল। মন্ত্রী হওয়ার পর বোর্ডের প্রতিটি পদে পছন্দের লোক বসিয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড দখল করেছেন নওফেল। তার সময়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে বসেছেন প্রদীপ চক্রবর্তী, মুস্তফা কামরুল আখতার ও রেজাউল করিম।
যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে আর্থিক অনিয়ম দুর্নীতি ও ফলাফল জালিয়াতি সহ নানা অভিযোগ। এদের মধ্যে সাবেক সচিব ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ এর ফলাফল জালিয়াতির ঘটনার অন্যতম আসামি মুস্তফা কামরুল আখতার। এছাড়াও নওফেলের আশীর্বাদপুষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে নারায়ণ চন্দ্র নাথ এর ফলাফল জালিয়াতি দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় তুলে। বর্তমানে সে পলাতক আছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চললে ও গত দুটি শুনানীতে তিনি অংশ নেননি। এদিকে ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার রক্তস্নাত বিপ্লবের পর চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ফ্যাসিস্ট কর্মকর্তাদের বদলি করা হলেও নতুন রূপে ফ্যাসিস্টদের আগমন বন্ধ হচ্ছে না। গত ২০ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে শিক্ষা বোর্ডে পদায়ন নেন নওফেলের দোসর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ওয়াসিম হাসান। তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিবকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা পদে পদায়ন নেন।
বোর্ড সূত্রে জানা যায় ওয়াসিম হাসান চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথ এর ঘনিষ্ঠ। নারায়ণ এর সাথে একাধিকবার নওফেলের বাসায় যান ওয়াসিম। এছাড়াও স্বাধীনতা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সংসদের নেতা ছিলেন ওয়াসিম হাসান। চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাথে ওয়াসিম এর ছিল বিশেষ সখ্যতা। চট্টগ্রাম কলেজের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন ওয়াসিম এর পদায়ন ছাত্রদের রক্তের সাথে বেইমানি। চট্টগ্রাম কলেজ এর আর একটি সূত্রে জানায় এক ছাত্রীর অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে তাকে রাঙামাটি বদলি করা হয়েছিল।
বহাল তবিয়তে দিদার
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের আলোচিত উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দিদারুল আলম। তার ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন কালে ঘটে ফলাফল জালিয়াতির ঘটনা। এছাড়াও বোর্ডে এসেছিল তার ভাই আওয়ামী দোসর ছাত্র আন্দোলন দমনের অন্যতম হোতা হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি মাহবুবুল আলম খোকার ছোট ভাই হিসেবে। পেয়েছিল নওফেলের আশীর্বাদ। দীর্ঘ ৫ বছরে বোর্ডে গড়ে তুলেছেন বিশাল সিন্ডিকেট। এখন ভোল পাল্টে চেয়ার রক্ষায় তৎপর। মাঝে তার ডাক্তার ভাইকে নিয়ে এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল অলি আহমদের বাসায় হাজিরা দিচ্ছে বলে শুনা যাচ্ছে।
এদিকে গতি ১৭ বছরে বৈষম্যের স্বীকার একাধিক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ওয়াসিম দিদার ফ্যাসিবাদের দোসর, তাদের এই পদে থাকা জাতির জন্য কলংকজনক। এদের অবিলম্বে অপসারণ করার দাবি জানান।
এদিকে বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ইলিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও আওয়ামী আমলে সর্বোচ্চ পাঁচটি সুবিধাজনক পদ পান। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের উপসচিব, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, কুমিল্লা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক, কমার্স কলেজ এর বিভাগীয় প্রধান, পটিয়া সরকারি কলেজ এর উপাধ্যক্ষ। বর্তমানে পল্টি মেরে মোটাঅংকের লেনদেন করে চেয়ারম্যান পদ বাগিয়ে নেন তিনি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জুবায়ের বলেন, আমরা কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছি। শীগ্রই তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নেওয়া হবে।
আরএক্স/