দালালদের সঙ্গে ডিপিডিসি’র পরিচালক শফিকুলের সখ্যতা
বশির হোসেন খান
প্রকাশ: ১২:১৩ অপরাহ্ন, ১৯শে মে ২০২৫

# সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অপারেশনের পকেট ভারি
# এক বিদ্যুৎ সংযোগে ৫ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন
# দুর্নীতি থামবে না
- ড. ইকবাল মাহমুদ সাবেক চেয়ারম্যান, দুদক
জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন
- ড. ইফতেখারুজ্জামান নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি
নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ কিংবা লোড বৃদ্ধি ও বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের কিস্তিসহ সব কাজের সুপারিশ করেন নির্বাহী পরিচালক (টিকনিক্যাল) অপারেশন কিউ এম শফিকুল ইসলাম (আইডি-২২৫৮৮)। তিনি গড়ে তুলেছেন দালাল সিন্ডিকেট। ওই চক্রের সঙ্গে সখ্যতা রেখে অবৈধ ভাবে আয় করছেন কোটি কোটি টাকা। পরিচালক অপারেশনের সুপারিশ নিতে গ্রাহকের গুনতে হয় লাখ টাকা। এই ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনে একটি অভিযোগ পত্র জমা পড়েছে। দুদকের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ডিপিডিসি সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিত নির্বাহী পরিচালক (টিকনিক্যাল) অপারেশন শফিকুল ইসলামের (আইডি-২২৫৮৮) নেতৃত্বে ২৮টি ডিভিশনের দালালরা এক জোট হয়েছেন। নিজের আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া হয়ে উঠেছেন এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা। তার দুর্নীতির লাগাম টানার কেউ নেই। সবাই নিশ্চুপ। আওয়ামী লীগের শাসনামলে দুর্নীতি অনিয়মের কারিগর ছিলেন তিনি, রাতারাতি ভোল পাল্টে নতুন উদ্যমে দুর্নীতির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, গ্রাহক নাজনীন আরা জামান, ঠিকানা-এম-২৩, রোড-১১, ব্লক-এম,এনওসিএস, বনশ্রী ডিভিশনে ১৩ টি মিটাররে অনুকূলে ৭৬ কিঃওঃ লোড বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করলে বিদ্যুৎ অফিস থেকে ৯২ কিলো লোড দেখিয়ে এইচ.টি সংযোগ জন্য চিঠি পাঠানো হয়। এর পরে এক দালালের মাধ্যমে পরিচালক অপারেশনকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন করে ৭৬ কিলো লোড অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। এবং সংযোগটি দ্রুত দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। শুধু এই গ্রাহক নন এই ধরনের সুপারিশ প্রতিদিন করছে পরিচালক অপারেশন শফিকুল। তিনি এইচ.টি সংযোগকে এলটি করার সুপারিশ করে থাকেন। এতে করে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। আর পকেট ভড়ছেন নির্বাহী পরিচালক অপারেশনের।
দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ডিপিডিসির দায়িত্বশীলরা প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে মৌন থাকলেও এসব কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করছে দুদক। তাদের বিরুন্ধে মাঠে নেমেছেন দুদকে অনুসন্ধানী টিম। ইতোমধ্যে বেশি কয়েকজনের সম্পদের খোঁজে কাজ করছে দুদক।
এ ব্যাপারে ডিপিডিসি’র পরিচালক অপারেশন কিউ এম শফিকুল ইসলামকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। এমকি ক্ষুর্দেবার্তা পাঠালে ওই বার্তা দালালকে ফরোয়ার্ট করেন। ঠিক তখন দালাল এ প্রতিবেদকে ফোন দিয়ে প্রতিবেদককে বলেন, অপারেশ শফিক স্যারকে আপনি কি মেসেস দিয়েছেন। এটা ঠিক করেননি। আমি কাজ করে খাই। এটা কি অপরাধ। আমি সবাইকে নিয়ে মিলে মিশে খাই।
এ ব্যাপারে গ্রাহকের আবেদনে ০১৯১৫-৯০-৩৭ নম্বর ব্যবহার করা হয়। যেখানে বলা হয় এই নম্বর নাজনীন আরা জামানের। এই নম্বরটি কল দিলে গ্রাহককে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান ড. ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে দুর্নীতি থামবে না।
এ ব্যাপারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অনিয়ম, দুর্নীতির সঙ্গে যে বা যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।
আরএক্স/