উত্তাল সাগরের ঢেউ আঘাত হানছে ঝাউবাগান ও জিওব্যাগে, বন্ধ ব্যবসাও
জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:২৭ অপরাহ্ন, ২৯শে মে ২০২৫

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে। জোয়ার পানি স্বাভাবিক চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে একের পর এক বিশাল বিশাল ঢেউ আঘাত হানছে ঝাউবাগানে ও জিওব্যাগে। ফলে সাগরপাড়ার ব্যবসা বন্ধ করে দিয়ে উপকূলে উঠিয়ে রাখা হয়েছে জেড স্কী ও কিটকট।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিলো আমেরিকান সেনা ও বিমান বাহিনী
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল সাড়ে ১০ টায় দেখা যায়, সাগর উত্তাল। সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ে জিও ব্যাগ ডিঙিয়ে আঘাত করছে ঝাউবাগানে। আবার জিও ব্যাগের ওপর বসে থাকা পর্যটকও ঢেউয়ের আঘাতে পড়ে যাচ্ছে। অনেক পর্যটক পানিতে নামতে চাইলেও বড় বড় ঢেউ দেখে নামছে না। অনেকেই বড় বড় ঢেউ পেছনে রেখে ছবি তুলে চলে যাচ্ছেন। অনেক পর্যটক উত্তাল সাগর উপভোগ করছেন দূর থেকে।
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক রশিদ আহমেদ বলেন, গত ২ দিন ধরে কক্সবাজারে। কিন্তু সাগর এতো উত্তাল ছিল না। আজকে দেখছি সাগর প্রচন্ড উত্তাল। সাগরে গোসলে নামার উপায় নেই। মনে হচ্ছে সাগরে নামলেই ঢেউ আঘাত করে নিয়ে যাবে।
আরেক পর্যটক মোহাম্মদ এমদাদ বলেন, এমন সাগর আগে কোন দিন দেখা হয়নি। এতো বড় বড় ঢেউ, সাগরের এমন সৌন্দর্য দূর থেকে খুবই উপভোগ করছি। তবে গোসল করতে নামে চেয়েছিলাম, কিন্তু লাইফ গার্ড কর্মীরা নামতে দেয়নি।
সৈকতের লাইফ গার্ড কর্মী মোহাম্মদ শুক্কুর বলেন, জোয়ারের সময় সাগর বেশি উত্তাল। পানি উচ্চতা ৪ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাই অনেক পর্যটক সাগরে গোসল করতে নামতে চাইলেও সাগর উত্তাল থাকায় কাউকে নামতে দেয়া হচ্ছে না। ট্যুরিস্ট পুলিশ, লাইফ গার্ড ও বিচ কর্মী সবাই একযোগে কাজ করছি। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সবাইকে সতর্ক করে দেয়া হচ্ছে।
এদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে বিপাকে পড়েছেন সৈকতপাড়ের জেড স্কী, বিচ বাইক, ফটোগ্রাফার ও কিটকট ব্যবসায়ীরা। সাগরের বড় বড় ঢেউয়ের আঘাতে জেড স্কী উপকূলে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে উঠিয়ে রাখা হয়েছে পর্যটকদের বসার কিটকটও (ছাতা)। পর্যটক কম থাকায় ব্যবসা হচ্ছে না ফটোগ্রাফার ও বিচ বাইক চালকদের।
জেড স্কী চালক ফরমান বলেন, সাগরের বিশাল বিশাল ঢেউ। যার কারণে জেড স্কী উপকূলে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। ব্যবসা এক প্রকার বন্ধ।
কিটকট ব্যবসায়ী রানা বলেন, লাবনী থেকে সুগন্ধা ও শৈবাল পয়েন্ট পর্যন্ত কয়েক'শ কিটকট বালুচর থেকে উঠিয়ে রাখা হয়েছে। এখন ব্যবসা বন্ধ করে নিরাপদে বসে আছি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতের দাবিতে রামুতে মানববন্ধন
এদিকে বেলা ১১ টার পর শুরু হয় তুমুল ঝড়ো বৃষ্টি। পর্যটকরা ছুটতে থাকা দিক-বিদিক। অনেকেই বৃষ্টিতে ভিজছে, অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে। তুমুল বৃষ্টির সঙ্গে শুরু হয় বাতাসও। বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে ময়লা আবর্জনাও। আর গাছপালাও ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। চারদিকে মেঘাচ্ছন্ন।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হান্নান বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় (সকাল ৯টা) কক্সবাজারে ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। আজ ও কাল ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে এবং এর পরেও হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি ১-২ দিন থাকবে।
এসডডি/