পাথরঘাটায় বেরিবাঁধ ভেঙ্গে ৬ গ্রাম প্লাবিত, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩:৫২ অপরাহ্ন, ৩১শে মে ২০২৫

নিম্নচাপের কারণে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের কারণে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া ইউনিয়নের হলতা নদীর বেড়িবাঁধের মানিকখালী অংশ ভেঙে প্রায় ৬ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে পড়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় জনদুর্ভুকে পড়েছে ছাত্র/ছাত্রী সহ স্থানীয় সাধারণ মানুষ।
আরও পড়ুন: পাথরঘাটায় ৩৫ কেজি হরিণের মাংসসহ পাচারকারী আটক
নাচনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য মো. আতিকুর রহমান ছালু জানান, বুধবার থেকেই পাথরঘাটায় বৃষ্টিসহ জোয়ারে তোরে এলাকায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নাচনাপাড়া হলতা নদীর বেড়িবাঁধ মানিকখালী ও নাচনাপাড়া বাজার সংলগ্ন অংশ ভেঙে প্রায় ৬ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গ্রামগুলো হলো, মানিকখালী, নাচনাপাড়া, জ্ঞানপাড়া, উত্তর কাঠালতলী, কেরামতপুর, পুটিমারা।
স্থানীয় বাসিন্দা আ. জলিল ও নাসির উদ্দিন বলেন, বেড়িবাঁধ ভেঙে আমাদের ঘর বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। রান্না ঘর তলিয়ে যাওয়ায় গতকাল রাত থেকে রান্না করতে না পারায় শুকনো খাবার খেয়ে রাত কাটাতে হয়েছে অনেকের। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে শত শত মানুষ। অনেকের বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। ইতোমধ্যে পুকুরের মাছ ও ক্ষেতের ফসল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, চলতি বছরের ৮ আগস্ট জ্ঞানপাড়া গ্রামের কিছু সংখ্যক মানুষ বেরীবাঁধের একটি অংশ পানির সংকট নিরসনের জন্য কেটে ফেলে। পরবর্তীতে স্থানীয় এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই বেরীবাঁধ নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করেন। উপজেলা কাকচিড়া ইউনিয়নের রাজু মিয়া নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মেরামতের কাজ পেয়ে মাটির কাজ শুরু করেন। কিন্তু কিছুদিন পর অজ্ঞাত কারণে বেরিবাদ মেরামতের কাজ বন্ধ রাখে। অসমাপ্ত কাজের জায়গা থেকে বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই বৃষ্টির পানি ও নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানির চাপে বাঁধটি আবার ভেঙ্গে যায়।
নাচনাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য মহিউদ্দিন পান্না বলেন, বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যেই আমাদের প্রায় ৬ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঠিকাদারের গাফিলতিতে এমনটা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাথরঘাটায় জেলের জালে ৩৪ কেজি ভোল মাছ বিক্রি হল সাড়ে ৯ লাখ টাকায়
নাচনাপাড়া শিংড়াবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আখতারুজ্জামান খাঁন বলেন, বেরীবাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় যেমনি ভাবে ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, সাথে সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে তিনটি ইউনিয়নের। এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন স্কুল ,কলেজ,মাদ্রাসার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যাওয়া আসা করে । পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নিয়োগকৃত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ অসম্পূর্ণ রেখে চলে যাওয়ায় আজ এ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাঁধটি পুনঃনির্মাণ না করলে চরম ভোগান্তিতে পরবে শিক্ষার্থীরা ও সাধারণ মানুষ।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, বেড়িবাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর শুনেছি। তাৎক্ষণিক পানি উন্নয়ন বোর্ড কে জানানো হয়েছে। বৃষ্টি থামলেই তারা সরেজমিন এসে বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করবে।
এসডি/