ফ্রান্সে ভয়াবহ দাবানল, পুড়ছে প্যারিসের চেয়েও বিশাল এলাকা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০১:৪০ পিএম, ৭ই আগস্ট ২০২৫

ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলীয় অড অঞ্চলে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে, যা আকারে রাজধানী প্যারিসের চেয়েও বড় এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দাবানলে প্রাণ হারিয়েছেন একজন, ধ্বংস হয়েছে অন্তত ২৫টি বাড়ি এবং বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন প্রায় ২,৫০০ পরিবার।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
রয়টার্স জানায়, দাবানলে সাঁ লরঁ দ্য লা ক্যাবরিস নামের একটি গ্রামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। পারপিনিয়াঁ শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রামটি। আগুন দ্রুত বন ও গ্রামে ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অনেক সড়ক।
দাবানল কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে একে নজিরবিহীন এক দুর্যোগ বলে অভিহিত করেছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরু।
ইতোমধ্যে ১৫ হাজার হেক্টরের বেশি এলাকা পুড়ে ছাই হয়েছে, যা আগের কয়েক বছরে পুরো ফ্রান্সজুড়ে পোড়া এলাকার সমান। ১৯৪৯ সালের পর এত বড় একক দাবানল আর হয়নি বলে জানান দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইয়ো।
দুর্যোগের সময়কার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা জানিয়ে রেনাতে কুট নামে এক ডাচ পর্যটক বলেন, গাড়িতে লাফ দিয়ে পালাতে হয়েছে। কিছুই সঙ্গে নিতে পারিনি। অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছি।
ইসা মেদিনা নামে এক স্প্যানিশ পর্যটক বলেন, এটা বিশ্বাসই করা যাচ্ছে না একেবারে ধ্বংসযজ্ঞ।
স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র এরিক ব্রোকার্দি জানান, প্রায় দুই হাজার দমকল কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। দুর্যোগ কবলিত এলাকায় প্রায় ২৫০০ পরিবার বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে আগুন।
এদিকে প্রচণ্ড গরম ও দিক পরিবর্তনশীল বাতাস দাবানল নিয়ন্ত্রণকে আরও কঠিন করে তুলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে গ্রীষ্মে অতিরিক্ত গরম ও শুষ্কতা বিরাজ করে, যা দাবানলের ঝুঁকি বাড়ায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ঝুঁকি এখন বসন্ত ও শরৎকালেও ছড়িয়ে পড়ছে, এমনকি ফ্রান্সের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলেও।
দাবানলের সঙ্গে লড়ছে শুধু ফ্রান্স নয়, স্পেন ও পর্তুগালেও দাবানলের প্রকোপ বেড়েছে। স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় তারিফা অঞ্চলে একটি ক্যাম্পসাইট থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পর্তুগালে চলতি বছর দাবানলে ৪২ হাজার হেক্টর এলাকা পুড়ে গেছেযা গত বছরের তুলনায় ৮ গুণ বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে অতিরিক্ত গরম, শুষ্কতা ও পরিবর্তনশীল বাতাস এই ধ্বংসযজ্ঞের জন্য দায়ী। আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লাগতে পারে আরও কয়েকদিন।
এসডি/