জাতীয় পার্টি প্রহসনের নির্বাচন চায় না: জিএম কাদের
নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২

‘কর্তৃত্ববাদী সরকারের সামনে প্রশাসন বা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো অসহায় হয়ে পড়ে। তাই কর্তৃত্ববাদী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা আছে। জাতীয় পার্টি প্রহসনের নির্বাচন চায় না।’
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আলোকিত মানুষ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নাজমিন সুলতানা তুলির নেতৃত্বে একদল নারী উদ্যোক্তা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের হাতে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগদান অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এসব কথা বলেন। শনিবার (২১ মে) দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এসময় তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যেই সরকার প্রধান ঘোষণা করেছেন আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন ইভিএম-এ। সবগুলো আসনে ইভিএম-এ ভোটগ্রহণ না করলেও, যে সকল আসনে সরকারদলীয় প্রার্থীরা প্রকাশ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না, সেখানে হয়তো ইভিএম-এ ভোটগ্রহণ চলবে। জাতীয় পার্টি প্রহসনের নির্বাচন চায় না। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলকে আলোচনার জন্য ডাকা হলে, আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংলাপে অংশ নেব।’
জিএম কাদের আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেশে ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা চালু করেছে। ঔপনিবেশিক আমলে মানুষকে শোষণ করতে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হতো। প্রশাসকদের জবাবদিহিতা থাকত শুধু সরকারের কাছে। কারণ সাধারণ মানুষের কাছে প্রশাসকদের কোনো জবাবদিহিতা থাকে না। বর্তমানে দেশে গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটাও নেই। সব ক্ষেত্রে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, রাজনীতিবিদদের কোনো কর্তৃত্ব নেই। তাই দেশের জনগণের কাছে কারো জবাবদিহিতা নেই।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আদর্শগত পার্থক্য থাকলেও, চরিত্রগত কোনো পার্থক্য নেই। দল দুটি দুর্নীতি, দুঃশাসন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দলবাজি করে মানুষের মাঝে বিভেদ তৈরি করেছে। তারা বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের মাঝে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। দেশের মানুষের কোনো অধিকার নেই। দেশের মানুষের নিরাপত্তা নেই। হাসপাতালের জন্য বড় বড় ভবন তৈরি হচ্ছে, কিন্তু হাসপাতালে ডাক্তার নেই, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে লেখাপড়া নেই, ছাত্রদের শুধু পাস করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আবার মাদক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। অভিযোগ আছে জাতিকে ধ্বংস করতে মাদক বিস্তারে ক্ষমতাসীনরা জড়িত।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কোন জোটে যাবে, ‘তা নির্বাচনের পূর্বে পরিস্থিতি ও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে, বর্তমানে ৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েই রাজনীতির মাঠে এগিয়ে চলছে জাতীয় পার্টি।’
এসময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। গেলো তিন বছরে মানুষের ব্যয় বেড়েছে ৪০ শতাংশ। কিন্তু আয় বাড়েনি। আওয়ামী লীগের দুর্নীতি ও দুঃশাসনের কারণে দেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায় না। মন্ত্রীরা যা বলেন, তা সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে না। মন্ত্রীরা দেশের মানুষকে সম্মান দিয়ে কথা বলতে জানেন না। আবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বিএনপিকেও বিশ্বাস করেন না সাধারণ মানুষ। দুটি দলের বিকল্প হিসেবে জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায় দেশের মানুষ।’
তাই জাতীয় পার্টিকে আরও শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শেরীফা কাদের, নাজনীন সুলাতানা, মাসরুর মওলা, ভাইস চেয়ারম্যান শফিউল্লাহ শফি প্রমুখ।
এসএ/
বিজ্ঞাপন
পাঠকপ্রিয়
আরও পড়ুন

শহীদদের দলীয়করণ করলে তাদের অবমূল্যায়ন করা হবে: ডা. জাহিদ হোসেন

খেলাধুলা ও ক্রীড়াঙ্গন রাজনীতি মুক্ত থাকা উচিত : মির্জা ফখরুল

তারেক রহমানের দেশে ফেরার নেপথ্যে নিরাপত্তা ও নির্বাচন

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে সরকারকে তারেক রহমানের আহ্বান
