সাঈদী মামলায় জোরপূর্বক মিথ্যা সাক্ষ্যের অভিযোগ, তদন্তে ট্রাইব্যুনাল

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া প্রয়াত আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার সাক্ষীরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
এর মধ্যে মামলার বাদীসহ চারজন সাক্ষী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসে জানিয়েছেন, ভয়ভীতি ও চাপ প্রয়োগ করে তাদের দিয়ে সাঈদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য আদায় করা হয়েছিল।
সাক্ষীদের দাবি, তৎকালীন সরকার ও সংশ্লিষ্ট বাহিনীর হুমকির মুখে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তার জন্য তারা শেখানো বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করেন। এই বক্তব্যের ভিত্তিতেই ট্রাইব্যুনাল সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়। বাদী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডারও একই অভিযোগ করেছেন।
এছাড়া ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর আদালতের গেট থেকে অপহৃত সুখরঞ্জন বালি (যিনি শহীদ বিশা বালির ভাই) অভিযোগ করেছেন, সত্য সাক্ষ্য দিতে আসায় তাকে অপহরণ করে নির্যাতনের পর অর্ধমৃত অবস্থায় ভারতের বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে পাঁচ বছর কারাবন্দি থাকার পর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তিনি দেশে ফেরেন।
প্রসিকিউশন সূত্র জানায়, বাদীসহ সাক্ষীদের এসব অভিযোগ তদন্ত করছে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। শেখ হাসিনাসহ অন্তত ৪০ জনকে বিচারের আওতায় আনার লক্ষ্যে তদন্ত এগোচ্ছে। তবে সাঈদী মারা যাওয়ায় তার মামলার মরণোত্তর পুনঃবিচার হবে না। তিনি ২০২৩ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
ট্রাইব্যুনালের জ্যেষ্ঠ প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের দিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এসব অভিযোগ তদন্ত করা হবে, প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দিলে প্রসিকিউশন ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র (ফরমাল চার্জ) দাখিল করবে বলে জানান তিনি।