যমুনার ভাঙনে দিশেহারা চরাঞ্চলের মানুষ


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


যমুনার ভাঙনে দিশেহারা চরাঞ্চলের মানুষ

বর্ষার পানি আসার সাথে সাথে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা, বাঘুটিয়া ও চরকাটারী ইউনিয়নের যমুনা তীরবর্তী এলাকায় শুরু হয়েছে ব্যপক ভাঙন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ওই এলাকার মানুষজন। প্রতি বছরই বর্ষার শুরুতেই ভাঙন শুরু হয়, এ বছর ঘন ঘন বৃষ্টির কারণে তা বহুগুণে বেড়ে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে সরকারের সূ দৃষ্টি কামনা করেন এলাকাবাসী। 

সরোজমিনে দেখা যায়, বাঘুটিয়া ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি, জোতকাশি, ইসলামপুর,বাশাইল, পাচুরিয়া,রাহাতপুর, বাচামারা ইউনিয়নের বাগষাইট্টা, সুবুদ্ধিয়া, নিজ ভাড়াঙ্গা উত্তর খন্ড, চর ভাড়াঙ্গা দক্ষিণ খন্ড ও চরকাটারী ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া, সধিরের পাড়া, চরগোবিন্দপুর, সেক পাড়ার প্রায় বেশিরভাগ বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও চরকাটারী ইউনিয়নের তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৩৩ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩১ নং যমুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরকাটারী  সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয় সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এভাবে নদী ভাঙন চলতে থাকলে এক সময় এই তিন ইউনিয়ন কোন অস্তিত্বই আর খুজে পাওয়া যাবে না।  

দৌলতপুর উপজেলার এই তিনটি ইউনিয়নে হাজারের মত ঘরবাড়ি ও শতশত বিঘা ফসলি জমি, রাস্তাঘাট বাজার নদীতে বিলীন হয়েছে। বাড়িঘর সহায় সম্বল  হারিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে অসংখ্য পরিবার। অনেকে সবকিছু হারিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন৷  হুমকির মধ্যে রয়েছে  আরও অসংখ্য বাড়িঘর ও ফসলি জমি, রাস্তাঘাট। ফলে চরম আতংকে দিন কাটাচ্ছে এই সব এলাকার স্থানীয়  নারী-পুরুষ।

চরগোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইউনুস আলী বলেন, “প্রতি বছরই আমরা যমুনার ভাঙনের শিকার হই। আমার বাড়ি এ পর্যন্ত চারবার ভাঙনের কারণে সরিয়েছি। ভাঙন শুরু হলে অনেকেই দেখতে আসেন, নানান প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলে যান। অনেক সময় কিছু জিও ব্যাগ নদীতে ফেলা হয় যা কোন কাজেই আসে না। স্হায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধ করার অনুরোধ জানান তিনি।” 

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইমরুল হাসান জনবাণীকে বলেন, আমি ইতিমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। উর্ধতন কর্তপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছি এবং  স্হানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের খতিগ্রস্হ পরিবারের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছি। তালিকা পেলে তাদের সহযোগিতা করা হবে।”

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মঈন উদ্দিন আহমেদ জনবাণীকে বলেন, “শুকনো মৌসুমে বাচামারা ইউনিয়নে ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে দুই কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন রোধে কাজ করা হয়েছে। আপাতত কোন বরাদ্দ নেই। পানি শুকিয়ে গেলে নতুন বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে। এখন জিও ব্যাগ ফেলে কোন লাভ হবে না।”

এসএ/