হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে রাস্তায় সন্তান প্রসব


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে রাস্তায় সন্তান প্রসব

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে রাস্তায় সন্তান প্রসব করলেন একজন দরিদ্র মা উন্নত চিকিৎসার জন্য মা ও শিশু দুজনকেই বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলার ফুলঝুরি এলাকার দরিদ্র রিক্সা চালক ইব্রাহিমের স্ত্রী লিমা আক্তার প্রসব বেদনা নিয়ে বুধবার (২৭ জুলাই) সকালে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।

প্রচন্ড প্রসব বেদনায় যখন ছটফট করছিলেন রাত দশটার দিকে প্রসূতি মা লিমা আক্তার কে আল রাজী নামের স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে পাঠানোর কথা বলেন জেনারেল হাসপাতালে কর্তব্যরত নার্স। বেসরকারি ওই ক্লিনিকে গেলে সেখানেও চিকিৎসা সেবা দিতে অস্বীকৃতি জানান কর্তৃপক্ষ। এরপরই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বরগুনা জেলা যুবলীগের একজন কর্মী আবু হানিফ দোলন। হাসপাতাল সহ একাধিক বেসরকারি ক্লিনিক এর সাথে কথা বলেও প্রসূতি মা লিমা আক্তারের চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে পারেননি তিনি। এমন পরিস্থিতিতে বরগুনার পশু হাসপাতাল সড়কেই সন্তান প্রসব করেন অভাগা মা লিমা আক্তার। এরপর জেলা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে।

প্রত্যক্ষদর্শী যুবলীগ নেতা আবু হানিফ দোলন বলেন, “রাত সাড়ে ১১টার দিকে আলরাজি ক্লিনিকের সামনে দিয়ে বাসায় যাচ্ছিলাম। এমন সময় ক্লিনিকের ভেতরে দুই নারীর আহাজারি দেখে তাদের কাছে গেলে পুরো বিষয়টি জানতে পারি। আমি ওই প্রসূতিকে শেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাই নিয়ে যাওয়ার সময় পথেই বাচ্চা প্রসব করেন।”

লিমা বেগমের মা বলেন, “হাসপাতাল দিয়া মোগো প্রাইভেটে পাডাইছে। মোগো টাহা নাই তাও প্রত্যেকটা প্রাইভেট হাসপাতালের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি চিকিৎসার লাইগা হেগোও ডাক্তার নাই। কেউ পারলোনা আমার মাইয়ার চিকিৎসা দিতে। আমার নাতি শেষ পর্যন্ত রাস্তায় হওয়া লাগলো।”

শেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. জান্নাতুল আলম লিমা জনবাণীকে বলেন, “আমি ডিউটি শেষে বাসায় গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পর খবর পাই, পশু হাসপাতাল সড়কে এক নারী সন্তান প্রসব করেছেন। তাকে উদ্ধার করে আমাদের এখানে আনা হয়েছে। তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে ছুটে এসে ওই নারীকে দেখি। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় অবস্থা গুরুতর, তাই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছি। তবে নবজাতক সুস্থ আছে কিন্তু সেও আশংখ্যা মুক্ত নয়।”

কী কারণে লিমা বেগমকে হাসপাতালে চিকিৎসা না দিয়ে ক্লিনিকে পাঠানো হলো জানতে বরগুনা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোহরাব হোসেনের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তার ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তাই তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এসএ/