নানার লালসার শিকার নাতনী, ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


নানার লালসার শিকার নাতনী, ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা

প্রতীকী ছবি

কথায় আছে “আগুনের কাছে মোম আর নারীর কাছে পুরুষ হল জম”। লালসার কাছে সম্পর্ক বড় অসহায় অচেনা। যার বাস্তবিক প্রমাণ মিলেছে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে। সরিষাবাড়ী উপজেলার ৩ নং ডোয়াইল ইউনিয়নের রায়দের পাড়া গ্রামে নানার লালসার শিকার হয়ে নামে এক কিশোরীর ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের রায়দের পাড়া গ্রামে নাতনির রূপ-যৌবন দেখে লোভ সামলাতে পারেনি বৃদ্ধ নানা। তারম লালসার শিকার হয়ে নাতনী আজ ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আর এ ঘটনাটি প্রকাশ হয়েছে নাতনীকে বিয়ে দেওয়ার পর তার শ্বশুরবাড়ীতে। রটে যাওয়া এ ঘটনায় এখন এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড়।

জানা গেছে, উপজেলার ২ নং পোগলদিঘা ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিম এর মেয়ে  তার নানার বাড়ী ৩ নং ডোয়াইল ইউনিয়নের রায়দের পাড়া গ্রামে প্রায়ই আসা যাওয়া করতো। আর এই সুযোগে লম্পট দুশ্চরিত্র নানা মেছের আলীর লালসার শিকার হন নাতনি। এদিকে বিষয়টি ইতি লজ্জায় প্রকাশ করতে না পেরে সে ধীরে ধীরে অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। তবুও বিষয়টি গোপন রাখে নাতনি। এর কিছুদিন পর তার বাবা-মা সরিষাবাড়ী পৌরসভার বলারদিয়ার মধ্য পাড়া এলাকায় আবুল কালাম এর ছেলে রড় মিস্ত্রি সাগরের সাথে বিয়ে দেন। বিয়ের দিন ফুলশয্যা রাতে স্বামী সাগর স্ত্রীকে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে তোমার পেট এতো বড় কেন। তখন স্ত্রী তাকে বলে তার পেটে টিউমার আছে এবং সে শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ কথা শুনে স্বামী চিন্তিত মনে ঘুমিয়ে পড়ে। পরের দিন সকালে ছেলে তার মাকে বলে তোমরা একটি অসুস্থ মেয়ের সাথে আমার বিয়ে করালে। মা একথা শুনে হতবাক হয়ে ছেলের কাছ থেকে বিস্তরিত জানে এবং পরে পুত্রবধূকে সাথে নিয়ে সরকার পাশা ওয়েল ট্রাষ্ট্র নামক হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরিক্ষা করার জন্য নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর রিপোর্টে আসে কিশোরী একজন গর্ভবতী মহিলা। পরে ইতিকে বাড়ীতে এনে তার শাশুড়ী রওশনারা বেগম জিজ্ঞেস করে, ‘কে এই সর্বনাশ ঘটিয়েছে’? কিশোরী তখন নির্দ্বিধায় এ ঘটনা তার শ্বাশুড়ীকে খুলে বলে এবং এর জন্য তারা নানা মেসের আলী দায়ী বলে জানান।

শ্বাশুড়ি বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি পুত্রবধূকে নিয়ে তার পিতৃালয়ে গিয়ে রেখে আসেন এবং বিষয়টি তাদেরকে খুলে বলেন। পরে কিশোরীর নানা ও বাবা-মা বিষয়টি নিয়ে সমঝোতায় বসে এবং নাতনীর সংসার টিকিয়ে রাখতে ৪ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে স্বীকার হয়। পরে আপোষ নামার মধ্যে দিয়ে ৩ লাখ টাকা দেয় এবং ১ লাখ টাকা বাকি রাখার সত্যতা সহ স্বীকারোক্তি দেন মেছের আলীর কলেজ পড়ুয়া ছেলে তামিম মিয়া।

এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন কিশোরীর পিতা আব্দুর রহিম ও জেঠা আয়েত আলী। তারা বলেন, ‍“গর্ভের সন্তান নষ্ট করা হয়েছে। সে এখন চিকিৎসাধীন রয়েছে। পাশাপাশি তার শ্বশুরবাড়ীর লোকজনের সাথে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। আমরা বিষয়টি মীমাংসার জন্য সাংবাদিকসহ সকলের সহযোগিতা চাই।”

এ ব্যাপারে ডোয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।”

অপর দিকে সরিষাবাড়ী থানার ওসি তদন্ত আব্দুল মজিদ জনবাণীকে জানান, “এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া করা হবে।”

এসএ/