এইডসের ঝুঁকি বাড়ছে কক্সবাজারে!


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


এইডসের ঝুঁকি বাড়ছে কক্সবাজারে!

কক্সবাজারে প্রতি বছরই ক্রমাগত বাড়ছে এইচআইভি শনাক্তের সংখ্যা। ফলে বাড়ছে এইডসের ঝুঁকি। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের এআরটি অ্যান্ড এইচআইভি শাখার তথ্য মতে, ২০১৫ সাল থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এইচআইভি স্ক্যান করার কার্যক্রম শুরু হয়। ব্যাপকভাবে রোহিঙ্গা আসার পর ২০১৭ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কক্সবাজারে ৫৩৮ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয়। এদের মধ্যে ৩৯৫ জনই রোহিঙ্গা।

তবে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত কক্সবাজারে এইডস রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫৪ জনে। তার মধ্যে ৭৭১ জনই রোহিঙ্গা। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭১০ জন, যেখানে রোহিঙ্গা ৬১২ জন এবং বাঙালি রয়েছেন ৯৮ জন। এ পর্যন্ত এইডস আক্রান্ত হয়ে ৬১ জন রোহিঙ্গা ও ৫৭ জন বাঙালির মৃত্যু হয়েছে।

আর সঠিক এবং বিশালভাবে এইচআইভি স্ক্যান করা হলে এ সংখ্যা আরও কয়েকগুণ বাড়তে পারে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের এআরটি অ্যান্ড এইচআইভি ফোকাল পার্সন মো. আশিকুর রহমান বলেন, এখনো পুরোটাই সংশ্লিষ্টদের স্ক্যানিংয়ের আওতায় আসেনি। এখনই সম্পূর্ণভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঠিক কি পরিমাণে এইডস সংক্রমিত রোগী রয়েছে।

তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এইডস ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম মিয়ানমার। রোহিঙ্গাদের মধ্যে এইডস আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি হওয়ায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও।

উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রনজন বড়ুয়া রাজন বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে একটা নির্দিষ্ট ভূখন্ডের মধ্যে আমরা আটকে রাখতে পারছি না। বাইরের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের অবাধ চলাফেরা আছে। বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের মাঝে এটার হার যদি বাড়তে থাকে অবধারিতভাবে আমাদের মধ্যেও সেটার প্রভাব পড়তে পারে।

এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের এইডস রোগ শনাক্ত করার পাশাপাশি তাদের তদারকির বিষয়টি গুরুত্ব দেন শরণার্থী ত্রাণ প্রত্যাবাসন কমিশনের স্বাস্থ্য সমন্বয়ক ও স্বাস্থ্যসেবা অধিদফতর।

কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন কার্যালয়ের স্বাস্থ্য সমন্বয়ক তোহা ভূঁইয়া বলেন, কক্সবাজারেও অনেক বিদেশগামী লোক আছে, তাদেরকে একটা স্ক্রিনিংয়ের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। আগেই যদি আমরা তদন্ত করতে পারি যে কতসংখ্যক আছে, তাহলে তাদেরকে সেবার আওতায় আনা সম্ভব হবে।

স্বাস্থ্য সেবা অধিদফতরের সংক্রামক রোগনিয়ন্ত্রণ বিভাগের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও লাইন পরিচালক প্রফেসর ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্পে যারা বসবাস করেন তারা যদি সচেতন না হন এবং তারা সচেতনতার জায়গা থেকে পরস্পর পরস্পরকে যদি সহায়তা না করেন তাহলে এটি কিন্তু সরকারের একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।

এসএ/