ব্রীজ তো নয়, যেন মরণ ফাঁদ!


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


ব্রীজ তো নয়, যেন মরণ ফাঁদ!

সুনামগঞ্জের উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের গোয়ারাই ব্রীজের মুখ মেরামত না করায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা বাণিজ্যসহ ঐ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত ব্যাবস্থায় চরম দূর্ভোগ নেমেছে। বন্ধ রয়েছে পরিবহণ যাতায়াত। এই ভাঙ্গনের কারণে শিক্ষার্থীদের যেমন লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে,তেমনি মালামাল পরিবহন করতে না পারায় উপজেলার শ্রীপুরবাজার, মঙ্গলপুর বাজার, বিয়ানীবাজার ও দোহালিয়াবাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।

বিগত ভয়াবহ বন্যায় এ ভাঙ্গনের সুত্রপাত হয় বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ফলে প্বাশবর্তি ছাতক ও বিভাগিয় শহর সিলেটের ও সুনামগঞ্জের সাথে উপজেলার পান্ডারগাঁও ও দোহালিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকার লক্ষাধিক মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্ধ হয়ে আছে মালামাল পরিবহন ব্যবস্থা। এতে করে বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে।

শ্রীপুর বাজারের ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‍“দোহালিয়াবাজার সংলগ্ন গোয়ারাই খালের উপর নির্মিত ব্রীজের মুখ বিগত বন্যার পানিতে ভেঙ্গে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা মালামাল পরিবহন করতে যেমন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন,তেমনি এলাকার মানুষের শিক্ষা,চিকিৎসাসহ যাবতীয় কাজ পরিচালনায় চরম দূর্ভোগ নেমে এসেছে। অধিক ভাড়া আর অনেক ঝুঁকি মোকাবিলা করে নদীপথে যাতায়াত করছেন এইসব এলাকার মানুষজন।”

মঙ্গলপুর বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সেক্রেটারি বদরুল ইসলাম বলেন, “জেলাশহর সুনামগঞ্জ ও ছাতক ভায়া বিভাগিয় শহর সিলেট যাতায়াতে উপজেলার দোহালিয়া ও পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের  একমাত্র রাস্তা গোয়ারাই। বন্যায় গোয়ারাই ব্রীজের মুখে গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে পরিবহন যাতায়াত ব্যাবস্থা বন্ধ রয়েছে। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছে স্থানীয় ব্যাবসায়ী, শিক্ষার্থী, চাকুরীজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষ। এসময় তিনি সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকতা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের   নিকট গোয়ারাই ভাঙ্গা মেরামতের আগে যাতায়াত ব্যাবস্থা সচল করার লক্ষে একটি অস্থায়ী বেইলী ব্রীজ নির্মানের দাবী জানান।”

দোহালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শামিম আহমদ জনবাণীকে জানান, “দোহালিয়া ও পান্ডারগাঁও দুই ইউনিয়নের মানুষের জনগুরুত্বপূর্ন রাস্তা গোয়ারাই, বিগত বন্যায় গোয়ারাই ব্রিজে বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুই ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় জনমনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ না থাকায় দুই ইউনিয়নের (ইউপি)চেয়ারম্যান জনগুরুত্বপূর্ন ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করার লক্ষে বন্যার পর থেকে উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তার সাথে একাধিকবার আলোচনা করেছি। এলজিইডি কর্মকতা সরেজমিনে পরিদশর্ন করে আশ্বস্ত করেছেন ব্রিজের গর্ত মেরামতে ব্যবস্থা নিবেন।”

পান্ডারগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ জনবাণীকে জানান, “বন্যার পর থেকে এখনো গৃহবন্দী রয়েছে পান্ডারগাঁও ইউনিয়নবাসী।পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের মানুষের বিভাগিয় শহর সিলেট ও জেলাশহর সুনামগঞ্জের পরিবহন যাতায়াতের বিকল্প রাস্তা না থাকায় গোয়ারাই ব্রিজ দিয়ে যেতে হয়।  ভয়াবহ বন্যায় গোয়ারাই ব্রিজে গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে করে দূর্ভোগ নেমে এসেছে ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থায়। এই রাস্তা দিয়ে পরিবহন যাতায়াত অচল থাকায় অতিরিক্ত ভাড়ায় নৌকাযোগে চলাচল করতে হচ্ছে ইউনিয়নবাসীকে। পান্ডারগাঁও ও দোহালিয়া দুই ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগসহ মাসিক সমন্বয় সভায় একাধিকবার  আলোচনা করেছি জনগুরুত্বপূর্ন গোয়ারাই ব্রিজে সৃষ্টি হওয়া গর্তটি মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আমরা দোয়ারাবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহি অফিসার,উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তার নিকট দাবী জানাই এই ব্রিজটি দ্রুতগতিতে মেরামত করে দুই ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করার জন্য।”

দোয়ারাবাজার উপজেলা এলজিইডি কর্মকতা মনছুরুল হক জনবাণীকে জানান, “ব্রিজটির প্রতিবেদন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরন করা হয়েছিলো, বরাদ্দ আসেনি। আমরা উপজেলা চেয়ারম্যান,উপজেলা নির্বাহি অফিসার,স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।”

এসএ/