স্কুলে ফ্যানের আঘাতে চোখ হারালেন শিক্ষিকা


Janobani

নিজস্ব প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ২২শে সেপ্টেম্বর ২০২২


স্কুলে ফ্যানের আঘাতে চোখ হারালেন শিক্ষিকা

 ক্লাস চলাকালীন সময়ে বাঁশে বাঁধা ফ্যানের দড়ি ছিঁড়ে পাখার আঘাতে ডান চোখ হারালেন শিরিনা আখতার (৪০) নামে এক সহকারী শিক্ষিকা। 

সোমবার (১ আগস্ট) কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। আহত শিক্ষিকার শিরিনা আখতার কুড়িগ্রাম পৌরসভার নাজিরা চৌধুরী পাড়া দক্ষিণ গ্রামের শেখ আলমগীর কবীর বাবলু’র স্ত্রী।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকালে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষিকার ডান চোখ অপারেশন করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার ডান চোখের কর্নিয়ার উপর আঘাত লেগে চোখটি নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে তার এই চোখ দিয়ে দেখার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।

স্কুলের শিক্ষিকা মিলনী রানী রায় বলেন, সোমবার দুপুরে দুজনে এক সাথে লাঞ্চ করার পর শিরিনা আখতার ৪র্থ শ্রেণির ক্লাস নিতে যান। এর কিছুক্ষণের মধ্যে তার চিৎকার শুনে আমরাসহ আশপাশের লোকজন ক্লাস রুমে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি তার ডান চোখে রক্তারক্তি অবস্থা। মাথার উপরের ফ্যানটি বাঁশ দিয়ে বাঁধা ছিল। একদিকের বাঁশের বাঁধন আলগা হয়ে বাঁশটি হেলে পরলে ফ্যানের একটি পাখা সরাসরি তার ডান চোখে আঘাত হানে।

তিনি জানিয়েছেন, পরে আহত শিক্ষিকাকে দ্রুত কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর দায়িত্বরত চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মঙ্গলবার তার চোখের অপারেশন করা হয়।

এ দিকে সাংবাদিকরা এ দুর্ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন- স্কুলের শিক্ষার্থীরা ভয়ে আর স্কুলেই আসেনি।

শিরিনা আখতারের স্বামী ও একই উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের সচিব শেখ আলমগীর কবীর বাবলু জানান, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডা. মুফাক খারুল ইসলাম মুকুলের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি মেডিক্যাল টিম সকাল ১১টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত অপারেশন করে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন- আঘাতপ্রাপ্ত চোখের কর্নিয়া ড্যামেজ হয়ে যাওয়ায় সেই চোখ দিয়ে দেখার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।

তিনি দাবি করেন- শিক্ষা বিভাগ ও স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে স্কুলঘর সঠিকভাবে মেরামত না করায় তার স্ত্রীর একটি চোখ হারাতে হলো।

গোড়াই দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামিমা ইয়াসমিন বলেন, আমাদের স্কুল ঘরটি অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়ায় অকস্মাৎ এ দুর্ঘটনায় আমরা মর্মাহত।

উলিপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাদির উজ্জামান বলেছেন, আপনাদের মাধ্যমে প্রথম খবরটি জানলাম। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।

আরএক্স/